পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের দফতরকে কালিমালিপ্ত করার অভিযোগে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল এবং এক ডেপুটি পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের ব্যবস্থা নিচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
পিটিআই রিপোর্ট মোতাবেক জানা গিয়েছে, কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং ডিসিপি (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে রিপোর্ট জমা দিয়ে রাজ্যপাল অভিযোগ করেছেন, তাঁরা এমনভাবে কাজ করছেন, যা একজন সরকারি কর্মীর পক্ষে একেবারেই শোভনীয় নয়।
গত মাসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে জমা দেওয়া রিপোর্টে রাজ্যপাল অভিযোগ করেন, তিনি প্রয়োজনীয় অনুমতি দেওয়া সত্ত্বেও ভোট পরবর্তী হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের তাঁর সঙ্গে দেখা করতে দিচ্ছেন না কলকাতা পুলিশ আধিকারিকরা।
বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের জমা দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে আইপিএস অফিসারদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
চিঠির প্রতিলিপি ৪ জুলাই রাজ্য সরকারকে পাঠানো হয়েছে।
২০২৪ সালের এপ্রিল-মে মাসে রাজভবনে কর্মরত অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে এক মহিলা কর্মীর মনগড়া অভিযোগ প্রচার ও উৎসাহিত করার অভিযোগও তুলেছেন রাজ্যপাল।
‘এই আইপিএস অফিসাররা তাদের কাজের মাধ্যমে কেবল রাজ্যপালের পদকেই কলঙ্কিত করেননি, এমনভাবে কাজ করেছেন যা একজন সরকারী কর্মচারীর পক্ষে সম্পূর্ণ শোভনীয় নয়। তারা সুবিধামতো আচরণবিধি উপেক্ষা করার পথ বেছে নিয়েছে।’ জানিয়েছেন তিনি।
৪ জুলাই কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে রাজ্যপালের দায়ের করা মানহানির মামলার শুনানি ১০ জুলাই হবে।
গত ২৮ জুন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন সিভি আনন্দ বোস।
রাজ্যপালের আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী বুধবার বিচারপতি কৃষ্ণ রাওয়ের এজলাসে বিষয়টি উল্লেখ করেন, যিনি বুধবার মামলার শুনানি দ্রুত তারিখের জন্য শুনানি স্থগিত করেছিলেন।
এদিকে এর আগে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল ও ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ের অপসারণ চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। উল্লেখ্য, রাজভবনে শ্লীলতাহানি কাণ্ডের তদন্তের দায়িত্বে আছেন ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। কেন্দ্রের কর্মিবর্গ ও প্রশিক্ষণ দফতরে চিঠি লিখে ইন্দিরা এবং বিনীত গোয়েলের অপসারণের দাবি জানিয়েছিলেন রাজ্যপাল। প্রসঙ্গত, সংবিধানের ৩৬১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, আইনি রক্ষাকবচ পেয়ে থাকেন রাজ্যপাল। তবে শ্লীলতাহানিকাণ্ডে কলকাতা পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। রাজভবনের কর্মীদের বিরুদ্ধে এফআইআর-ও করা হয়েছিল এই মামলায়।
এবার সেই কলকাতার পুলিশ কমিশনার ও ডিসিপি (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের ব্যবস্থা নিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।