স্ত্রীকে নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নিগ্রহের অভিযোগ উঠল ওড়িশার অভিনেতা তথা বিজেডি সাংসদ ও লোকসভায় দলের ডেপুটি চিফ হুইপ অনুভব মোহান্তির বিরুদ্ধে।
অনুভবের বিরুদ্ধে কটক মহকুমা আদালতে মামলা দায়ের করেছেন তাঁর স্ত্রী তথা ওড়িয়া সিনেমার প্রাক্তন জনপ্রিয় অভিনেত্রী বর্ষা প্রিয়দর্শিনী। আদালতে জমা পড়া আবেদনে নারীর বিরুদ্ধে ঘরোয়া হিংসা দমন আইনের ১২ নম্বর ধারায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বর্ষা। তাঁর দাবি, মদ্যপানে আসক্ত অনুভব তাঁকে প্রায়ই মারধর করতেন। শুধু তাই নয়, শ্বশুরবাড়ির পরিবারের সদস্যরা সুযোগ পেলেই তাঁকে নানান ভাবে অপমান ও লাঞ্ছনা করতেন বলে অভিযোগ বর্ষার।
২০১৪ সালে বিবাহসূত্রে বাঁধা পড়েন একাধিক ওড়িয়া ছবির হিট জুটি অনুভব ও বর্ষা। কিন্তু কয়েক বছর পর থেকে তাঁদের দাম্পত্যে ফাটল ধরতে সুরু করে।
স্বামীর বিরুদ্ধে বর্ষার অভিযোগ, ‘ও মাতাল ও বহু মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িত। মদ্যপানের সময় ওর বিচার-বিবেচনা লোপ পায় ও বাস্তব পৃথিবী সম্পর্কে জ্ঞান থাকে না। সেই সময় ও অকথ্য গালিগালাজ করে। ২০১৯ সালের লোক সভা নির্বাচনের পরে অনুভব ও তার পরিবারের সদস্যদের অভব্য আচরণ প্রতিদিন বাড়তে থাকে এবং ক্রমে অসহনীয় হয়ে ওঠে।’
বর্ষা আরও জানিয়েছেন যে, অনেক অনুনয় করা সত্ত্বেও লকডাউন শুরু হওয়ার পরে দুই মাস তাঁকে কটকে শ্বশুরবাড়িতে ফেলে রেখে নিজে দিল্লি পাড়ি দেন সাংসদ। দিল্লি থেকে কয়েক মাস পরে ফিরে এসে স্ত্রীর প্রতি আরও রূঢ় ব্যবহার শুরু করেন বিজেপি নেতা। বর্ষা জানিয়েছেন, গত ৭ জুন টানা ২ ঘণ্টা তাঁকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন অনুভব ও তাঁর বাবা। এর পর ১১ জুন তাঁকে পারস্পরিক বোঝাপড়ায় বিবাহবিচ্ছেদে রাজি হওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন স্বামী, অন্যথায় ফল খারাপ হবে বলেও তাঁকে শাসান।
আদালতে জমা দেওয়া আবেদনে বিবাহবিচ্ছেদের জেরে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১৫ কোটি টাকা দাবি করেছেন বর্ষা প্রিয়দর্শিনী। তাঁর যুক্তি, অভিনেত্রী হিসেবে আয় থেকে বঞ্চিত হওয়া এবং চিকিৎসার জন্য ওই পরিমাণ অর্থ তাঁর প্রয়োজন। সেই সঙ্গে মাসিক ৭০,০০০ টাকা মাসিক খোরপোষেরও দাবি করেছেন বর্ষা।
তবে বর্তমানে কেন্দ্রপাড়া সফরে ব্যস্ত অনুভব মোহান্তির দাবি, তিনি এই বিষয়ে কোনও আইনি নোটিশ পাননি।