ফের একবার ঘুষকাণ্ডে মার্কিন বিচার বিভাগের আনা অভিযোগ অস্বীকার করলেন আদানি গোষ্ঠীর সিএফও যুগেশিন্দর রবি সিং। তিনি জোর গলায় দাবি করেছেন, এই ধরনের কোনও বেআইনি লেনদেন হয়নি। বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এই নিয়ে যুগেশিন্দর বলেন, 'যে ব্যক্তিবিশেষের বিরুদ্ধে এই সব অভিযোগ আনা হয়েছে, তার পক্ষ থেকে সংস্থা সব অভিযোগ অস্বীকার করছে। আমরা ১০০ শতাংশ নিশ্চিত যে এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেনি। আমরা যদি কাউকে এত টাকা নগদে দিতাম, তাহলে আমি নিশ্চিত ভাবে সেই বিষয়ে অবগত থাকতাম। তাই আমি বলতে পারি যে এই ধরনের কোনও কিছুই ঘটেনি।' (আরও পড়ুন: পকেটে নেই খুচরো টাকা? এবার কলকাতায় অ্যাপেই কাটা যাবে বাসের টিকিট)
আরও পড়ুন: আর বিবৃতি নয়, বাংলাদেশি হিন্দুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এবার যা করবে ইসকন...
এদিকে সংস্থার সিএফও বলেন, 'মার্কিন বিচার বিভাগের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা সরাসরি কোনও পদক্ষেপ করব না। এই অভিযোগে যাঁর নাম আছে, তিনি নিজে এই নিয়ে কথা বলবেন। ১০ দিনের মধ্যে এই নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।' এছাড়া তিনি আরও জানান, সংস্থার আইনজীবীরা অভিযোগের বিষয়ে খতিয়ে দেখছে এবং তাতে কোনও ত্রুটি আছে কি না, তা বের করার চেষ্টা করছে। (আরও পড়ুন: 'হম দো, হমারা চার' চান সিদ্দিকুল্লা! 'জনসংখ্যা বিন্যাস বদলের ছক', বললেন শুভেন্দু)
আরও পড়ুন: মমতার মন্ত্রীর উস্কানিতে ভাঙা হয় বীরভূমের মন্দির, দাবি BJP-র, পালটা তোপ দেবাংশুর
উল্লেখ্য, মার্কিন মুলুকে মামলায় তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে গৌতম আদানি, সাগর আদানিদের বিরুদ্ধে। তবে বিদেশি দুর্নীতি সংক্রান্ত আইন ভঙ্গের কোনও অভিযোগ নাকি গৌতম আদানির বিরুদ্ধে আনা হয়নি। শেয়ার বাজারের ফাইলিংয়ে সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছিল এই বহুজাতিক সংস্থাটি। উল্লেখ্য, আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার গৌতম আদানি সহ মোট ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে ঘুষ কাণ্ডে। (আরও পড়ুন: একদিনে ৪ মন্দিরে হামলা বাংলাদেশে, তবে ভারত নিয়ে 'চিন্তিত' ইউনুসের উপদেষ্টা!)
আরও পড়ুন: আরজি কর মামলায় সন্দীপ ঘোষ সহ ৫ জনের নামে ১২৫ পাতার চার্জশিট গ্রহণ করল না আদালত
শেয়ার বাজার ফাইলিংয়ে আদানি গোষ্ঠীর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সিকিউরিটিজ জালিয়াতি ষড়যন্ত্র, অনলাইন লেনদেন জালিয়াতি ষড়যন্ত্র, এবং সিকিউরিটিজ জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে আদানির বিরুদ্ধে। তবে বিদেশি দুর্নীতি সংক্রান্ত আইন ভঙ্গের কোনও অভিযোগ নাকি গৌতম আদানির বিরুদ্ধে আনা হয়নি। এদিকে ভারতীয় সরকারি আধিকারিদের ঘুষ দেওয়ার মামলায় ইতিমধ্যেই গৌতম আদানি ও সাগর আদানিকে তলব নোটিশ পাঠিয়েছে মার্কিন যুক্তাষ্ট্রের সিকিউরিটি ও এক্সচেঞ্জ কমিশন। আমদাবাদে শান্তিবন ফার্মে গৌতম আদানির বাড়িতে এবং বোড়াকেভে সাগর আদানির বাড়িতে এই তলব নোটিশ পাঠানো হয়েছে। যদিও রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৬৫ সালের হ্যাগ কনভেনশন এবং ভারত-মার্কিন পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তির ফলেই আদানিকে এভাবে হুট করে তলবের নোটিশ পাঠাতে পারে না মার্কিন প্রশাসন। বিদেশি কোনও নাগরিককে এভাবে তলবের নোটিশ পাঠানোর এক্তিয়ার নেই সিকিউরিটি ও এক্সচেঞ্জ কমিশনের। আমেরিকায় ভারতীয় দূতাবাসের মাধ্যমে এই তলবের নোটিশ পাঠাতে হত মার্কিন শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে।
উল্লেখ্য, ভারতের সরকারি আধিকারিকদের ২৬.৫ কোটি ডলারের ঘুষের প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে আদানি এবং আজিউর পাওয়ার গ্লোবাল লিমিটেডের বিরুদ্ধে। রিপোর্ট অনুযায়ী, মার্কিন বিনিয়োগকারীদের প্রতারণা এবং কর্মকর্তাদের ঘুষের প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ধনকুবের গৌতম আদানির বিরুদ্ধে মামলা করেছে মার্কিন বিচার বিভাগ এবং মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন। তবে আদানি গোষ্ঠী নিজেদের ফাইলিংয়ে দাবি করল, ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে গৌতম আদানির নাম নেই। সেই অভিযোগে অভিযুক্ত আজিউর পাওয়ার গ্লোবাল লিমিটেডের এক কর্তা এবং এক কানাডিয়ান বিনিয়োগকারী।
এর আগে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, আদানি নাকি ভারতীয় আধিকারিকদের ঘুষের প্রস্তাব দিয়ে কয়েক বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছিল। ভারতীয় কর্মকর্তাদের ২৬.৫ কোটির ডলারেরও বেশি ঘুষের প্রস্তাব দিয়ে সৌরশক্তি সরবরাহের লাভজনক চুক্তি পেয়েছিল আদানি। এই চুক্তিগুলো থেকে ২০ বছরে ২০০ কোটি ডলারের বেশি মুনাফা অর্জনের আশা করা হয়। যদিও এই সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে আদানি গোষ্ঠী।