সেবি প্রধান মাধনী পুরী বুচের সঙ্গে আদানি যোগ আছে বলে নতুন একটি বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। এই আবহে এবার মুখ খুলল আদানি গোষ্ঠী। আজ সকালে এক বিবৃতি প্রকাশ করে আদানি গোষ্ঠীর তরফ থেকে বলা হয়েছে, 'জনসমক্ষে উপলব্ধ তথ্যের হেরফের করেছে হিন্ডেনবার্গ। আইনকে অবজ্ঞা করে ব্যক্তিগত মুনাফার জন্য পূর্ব-নির্ধারিত সিদ্ধান্তে পৌঁছেই সাম্প্রতিক এই অভিযোগগুলি করেছে হিন্ডেনবার্গ। আমরা আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগগুলি সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করি। এই দাবিগুলির পরিপ্রেক্ষিতে এর আগে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করা হয়েছে এবং সেগুলি ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত হয়েছে। মাননীয় সুপ্রিম কোর্ট ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে ইতিমধ্যেই এই সব দাবি খারিজ করেছে।' (আরও পড়ুন: হিন্ডেনবার্গের নয়া দাবি সামনে আসতেই '৩ জুনের শেয়ার বাজার জালিয়াতি' নিয়ে সরব TMC)
আরও পড়ুন: হিন্ডেনবার্গ বিস্ফোরণের পর সেবি কর্তার সাথে আদানি যোগের 'টাইমলাইন' প্রকাশ মহুয়ার
উল্লেখ্য, গতকাল হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টে অভিযোগ করা হয়, সেবি প্রধান মাধবী পুরী বুচ এবং তাঁর স্বামীর অংশিদারিত্ব রয়ছে বারমুডা ও মরিশাসের অখ্যাত অফশোর ফান্ডে। আদানিদের সঙ্গে সেই ফান্ডের যোগ আছে। ২০১৭ সালে মাধবী সেবির পূর্ণ সদস্য হওয়ার আগে নাকি তাঁর স্বামী এই বিনিয়োগ পুরোপুরি নিজের নামে করার আবেদন জানিয়েছিলেন। যাতে মাধবীর বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত না হয়। হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টে অভিযোগ করা হয়েছে, একটি মাল্টিলেয়ার অফশোর স্ট্রাকচারের মাধ্যমে এই বিনিয়োগ করা হয়েছে। এই আবহে বিনিয়োগের বৈধতা এবং উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তারা। আর এই অভিযোগ সামনে আসতেই মুখ খুলেছেন মাধবী এবং তাঁর স্বামী।
আরও পড়ুন: ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলায় বিধিনিষেধ, নোট বাতিলের আতঙ্ক, ভারতের ১ লাখ বাংলাদেশে কত?
মাধবী এবং তাঁর স্বামী এক বিবৃতি জারি করে বলেন, 'হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে তোলা সব অভিযোগ আমরা অস্বীকার করছি। এই দাবিগুলি ভিত্তিহীন। আমাদের জীবন এবং ফাইনান্স খোলা বইয়ের মতো। সেবিতে এত বছর ধরে কাজ করার ফলে সব আর্থিক লেনদেন প্রকাশ করতে হয়েছে। আমাদের কোনও আর্থিক লেনদেনের নথি প্রকাশ্যে আন কোনও দ্বিধা নেই। আমরা যখন প্রাইভেট নাগরিক ছিলাম এবং সেবির সঙ্গে যেই সময় কোনও সম্পর্ক ছিল না, তখনকার আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত নথিও আমরা প্রকাশ করতে পারি। যে কোনও তদন্তকারী সংস্থাও তা দেখতে চাইতে পারে। আমরা পরবর্তীতে এই নিয়ে আরও বিস্তারিত ভাবে মুখ খুলব। স্বচ্ছতা বজায় রাখার স্বার্থেই তা করা হবে।'
প্রসঙ্গত, এর আগে আদানি গোষ্ঠীকে নিয়ে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট প্রকাশের পরই তুলকালাম কাণ্ড হয়েছিল দেশের বাণিজ্য মহলে। ধস নেমেছিল আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে। এই পরিস্থিতিতে আদানিদের মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। উল্লেখ্য, হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, বিদেশে বেনামি সংস্থা খুলে নিজেদের শেয়ার নিজেরাই কিনে নিত আদানি গোষ্ঠী। এভাবে বাজারে ভুয়ো চাহিদা সৃষ্টি করে শেয়ারের দাম চড়ানো হত। যদিও তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রথম থেকেই অস্বীকার করে এসেছে আদানি গোষ্ঠী। উলটে তাদের অভিযোগ ছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক শর্ট-সেলার হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ তার 'মিথ্যা' রিপোর্টের মাধ্যমে কোম্পানিকে অপদস্থ করার চেষ্টা করছে।