আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের মন্ত্রী ভারতে পা রাখলেন। এই আবহে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে এটি একটি নয়া মোড়। রিপোর্ট অনুযায়ী, তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি দিল্লি সফরে এলেন আজ, ৯ অক্টোবর। তিনি ভারতে থাকবেন ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত। এই প্রথম তালিবান সরকারের কোনও মন্ত্রী ভারতে পা রাখলেন ভারতে। এই আবহে অফগানিস্তানের তালিবান সরকারের মুখপাত্র বলেন, আফগান বিদেশমন্ত্রী এই সফরকালে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক বিষয়ে কথা বলবেন। এর পাশাপাশি আফগানিস্তান এবং এই অঞ্চলের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা করবেন তিনি।
এদিকে আমির খান মুত্তাকির নাম আছে রাষ্ট্রসংঘের নিষিদ্ধ তালিকায়। এই আবহে বিদেশ সফরের জন্য রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অনুমতি প্রয়োজন পড়ে। এর আগে চিন এবং পাক বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক আলোচনার জন্য পাকিস্তান সফরে যাওয়ার কথা ছিল মুত্তাকির। তবে রাষ্ট্রসংঘের অনুমতি না পাওয়ায় সেই সফর হয়নি। চিন এবং পাক বিদেশমন্ত্রীরাই কাবুলে গিয়ে বেঠক করেছিলেন সেই সময়। তবে ভারত সফরের জন্য তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকিকে ৩০ সেপ্টেম্বরই অনুমোদন দেয় রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের অগস্ট মাসে আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখল করেছিল তালিবানরা। এরপর থেকে ভারত সরকারি ভাবে তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে তালিবান সরকারের সঙ্গে ভারতীয় আমলা পর্যায়ে একাধিক বৈঠক হয়েছে। আফগানিস্তানে প্রাকৃতিক দুর্যোগে বারবার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত। পাঠিয়েছে ত্রাণ। এই আবহে মুত্তাকির এই সফর ভারত ও আফগান সম্পর্কে নয়া সূচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, মুত্তাকির দিল্লি সফরের প্রস্তুতির জন্য বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি, আইএফএস অফিসার জেপি সিং বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছিলেন তালিবান নেতাদের সঙ্গে। এদিকে এর আগে অপারেশন সিঁদুরের সময় পাকিস্তান দাবি করেছিল, ভারত নাকি আফগানিস্তানে হামলা চালিয়েছিল। তবে তালিবান সরকার বিবৃতি জারি করে সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছিল। এদিকে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে আমিরের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের। পহেলগাঁও হামলার নিন্দা করার জন্য আমিরকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন তিনি। এদিকে পাকিস্তান প্রাথমিক ভাবে তালিবান সরকারকে সমর্থন করেছিল। তবে বর্তমানে পাকিস্তান এবং তালিবানের মধ্যে সম্পর্ক ততটা মধুর নয়। পাকিস্তানে থাকা পাঠানদের ওপর পাক সেনার হামলা এবং তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের সঙ্গে পাক সেনার লড়াইয়ের আবহে কাবুল এবং ইসলামাবাদের মধ্যে তিক্ততা বেড়েছে। এই আবহে দিল্লি এবং তালিবান সরকার কাছাকাছি আসায় দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতির ক্ষেত্রে তা উল্লেখযোগ্য বলে মনে করা হচ্ছে।