প্রথমবার ভারত সফরে এসে পাকিস্তানকে তোপ দাগলেন আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। পাকিস্তানের উদ্দেশে হুঁশিয়ারির সুরে মুত্তাকি বলেন, আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয় পাকিস্তানের। এদিকে তালিবান মন্ত্রী পাকিস্তানের উদ্দেশে বলেন, তারা যদি এতই অহংকারী হয়ে থাকে তবে আমেরিকা বা ন্যাটোকে প্রশ্ন করা উচিত। তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্বের বৃহত্তম শক্তিগুলিও আফগানিস্তান দখল করতে পারেনি।
সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মুত্তাকি বলেন, 'আফগানদের সাহসের পরীক্ষা করা উচিত নয়। সীমান্তের নিকটবর্তী প্রত্যন্ত এলাকায় হামলা হয়েছে। আমরা পাকিস্তানের এই কর্মকাণ্ডকে ভুল মনে করি। যদি কেউ আফগনদের সাহসের পরীক্ষা নিতে চায় তবে তাদের উচিত ব্রিটিশ, সোভিয়েত, আমেরিকা, ন্যাটোকে জিজ্ঞাসা করা... তাতেই তারা ব্যাখ্যা করতে পারে যে আফগানিস্তানের সাথে খেলা ঠিক নয়।' উল্লেখ্য, গত পরশু কাবুলে পাকিস্তান হামলা চালায় বলে দাবি করা হচ্ছে। এর আগেও একাধিবার আফগান আকাশসীমা লঙ্ঘন করার অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। এই আবহে মুত্তাকির এই হুঁশিয়ারি।
প্রসঙ্গত, তালিবানরা কাবুলে ক্ষমতায় আসার পরে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সফরে দিল্লি এসেছেন মুত্তাকি। আর সেদিনই কাবুলে বিস্ফোরণ হয়। জানা যায়, গত ৯ অক্টোবর মধ্যরাতের দিকে কাবুলের পূর্বাঞ্চলে শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আকাশে বিমানের আওয়াজ শোনা যায় এবং তার পরপরই বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যায়। এরপর গুলির আওয়াজও শোনা যায়। আমু টিভি এবং অন্যান্য আফগান মিডিয়া সূত্রের মতে, টিটিপি নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদ লুকিয়ে থাকা সন্দেহে একটি নির্দিষ্ট কম্পাউন্ড লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছিল। তবে পরে মেহসুদের একটি অডিয়ো বার্তা প্রকাশ করা হয় টিটিপির তরফ থেকে। দাবি করা হয়, তিনি বেঁচে আছেন।
এদিকে টিআরটি ওয়ার্ল্ডের খবরে বলা হয়, আফগান বিদেশমন্ত্রী ভারতে আসার পর এই বিস্ফোরণ ঘটেছে, যা কাকতালীয় বলে মনে হয় না। এর একদিন আগে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ আফগানিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। খাজা আসিফ বলেছিলেন, 'যথেষ্ট হয়েছে, আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। আফগানিস্তানের মাটি থেকে সন্ত্রাসবাদ অসহনীয়।' খাজা আসিফ আরও বলেন, তিনি এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তিন বছর আগে কাবুল সফর করেছিলেন এবং সেখানে সক্রিয় সন্ত্রাসীদের আস্তানা বন্ধ করার জন্য সতর্ক করেছিলেন। তাঁর কথায়, 'আমরা আফগান কর্তৃপক্ষকে বলেছি যে আপনার মাটিতে ৬০০০ থেকে ৭০০০ লোক রয়েছে যারা আমাদের জন্য হুমকি। আমরা গ্যারান্টি চেয়েছিলাম যে এই লোকেরা পাকিস্তানে ফিরে আসবে না, কিন্তু আফগান কর্তৃপক্ষ এই আশ্বাস দিতে রাজি ছিল না।' এদিকে সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে দিল্লি থেকে মুত্তাকি বার্তা দেন, ভারত বিরোধী কোনও জঙ্গি কার্যকলাপ আফগানিস্তানের মাটিতে হতে দেবে না তালিবান।