আসলে কোনও বিষয়ে লেগে থাকার মানসিকতা থাকলে সফলতা এসে ধরা দেয় একেবারে ঘরের দোরগোড়ায়। ঠিক যেমন হল দুলারামের ক্ষেত্রে। বয়স ৭০ বছর। তাঁর একটি বাছুর চুরি গিয়েছিল। কিন্তু সেই বাছুরকে উদ্ধার করার জন্য় একেবারে সবরকম চেষ্টা করেছিলেন দুলারাম। কী না করেননি রাজস্থানের ওই কৃষক। রোজ নিয়ম করে থানায় যেতেন। এমনকী পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য টাওয়ারেও চেপে বসেছিলেন।
অবশেষে দু বছরের লড়াইয়ের অবসান। বাছুর ফিরে পেলেন দুলারাম। বাছুরের মায়ের সঙ্গে ডিএনএ মিলে গিয়েছে। দুলারাম দেখিয়ে দিয়েছেন, লেগে থাকলে সবই সম্ভব।
আর যখন পুলিশ তাঁর হাতে বাছুরটি তুলে দেন তখন তিনি কার্যত আবেগে ভেসে যান। জড়িয়ে ধরেন সাধের বাছুরকে। সত্যিই তো এই বাছুর তো তাঁর পরিবারেরই একজন ছিল। সেটি চুরি যাওয়ার পর থেকে নাওয়া খাওয়া ভুলে গিয়েছিলেন দুলারাম। কিছুই ভালো লাগত না। এতটাই বাছুরকে ভালোবাসতেন দুলারাম।
২০২১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বাছুরটি চুরি গিয়েছিল। পরে তিনি চুরির অভিযোগ করেন থানায়। খোদ পুলিশ সুপার এনিয়ে হস্তক্ষেপ করেছিলেন। দুলারাম সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, জানেন থানার কাছে গেলেই পুলিশ আমাকে তাড়া করত। আমাকে অপমান করত। আর যে চুরি করেছিল সে উলটে আমায় চোর প্রমাণ করার চেষ্টা করত।
তবে দুলারামেরও জেদ। জমি বিক্রি করে দেব। তবু আমায় জিততেই হবে। এদিকে একদিন দুলারাম খবর পান মুখ্যমন্ত্রী এলাকায় আসবেন। আর সেদিনই তিনি দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য টাওয়ারে উঠে পড়েন। তখন পুলিশ কোনওরকমে তাঁকে নামিয়ে আশ্বাস দেন, বাছুরের ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে।
এরপর সেই মতো দুলারামের বাড়িতে থাকা গরু আর চুরি যাওয়া গরুর ডিএনএ মিলিয়ে দেখার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর ২০ মে রিপোর্ট আসে। আর সেখানে দেখা যায় ডিএনএ মিলে গিয়েছে। অবশেষে চুরি যাওয়া গরু হাতে পেয়েছেন দুলারাম। তবে কি লড়াই শেষ?
না একেবারেই নয়। এবার তাঁর নতুন লড়াই। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, যে পুলিশ আমার এফআইআর নিচ্ছিল না তাদের বিরুদ্ধে এবার ধর্নায় বসব। দুলারামের জেদ এতটাই।