২৮ বছর ধরে বাড়ি ভাড়া দিয়ে থেকে ছিল দুই ব্যক্তি। আরও তিন মাস টাকা না দিয়ে তারা থাকতে পারবে, তবে বাড়িতে নয় শ্রীঘরে। সুপ্রিম রায়ে এই দুই ব্যক্তিকে জেলে থাকতে হবে কারণ আদালতে আন্ডারটেকিং দেওয়ার পরেও ভাড়া বাড়িটি মালিকের হাতে তুলে দেয়নি তারা।
বিচারপতি সঞ্জয় কলের বেঞ্চ আদালত অবমাননার দায় এই দুই ব্যক্তিকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে বাড়ির তালা ভেঙে হায়দরাবাদ পুলিশকে মালিকের কাছে বাড়ি হ্যান্ডওভার করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বেঞ্চ।
১৯৯২ সালে এই আইনি লড়াই শুরু হয়। হায়দরাবাদ নিবাসী সরস্বতী সিং তাঁর ভাড়াটে আবদুল রেহমানকে বাড়ি ছাড়তে বলেন। এরপরই রেহমান ভাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেয়। সরস্বতী রেন্ট কন্ট্রোলে যান, যেখানে ১৯৯৮ সালে রেহমানকে বাড়ি ছেডে় দিতে বলে। এরপর ট্রাইবুনালে যায় রেহমান। সেখানেও তার পরাজয় হয়। কিন্তু তারপর অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্টে যায় সে। হাইকোর্ট বলে যে বাড়িওয়ালা-ভাড়াটের সম্পর্ক ঠিক করে স্থাপিত নয় কারণ সরস্বতী কানাডায় আছে ও একজনকে পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি দিয়েছে মামলা চালাতে। হাইকোর্ট রেহমানের পক্ষে রায় দেয়। এরপর সুপ্রিম কোর্টে যায় বাড়িওয়ালা। সেখানে সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্টের অর্ডারে ভুল খুঁজে পায় কারণ রেহমান অতীতে লিজ ডিডে সই করেছে ও ভাড়া দেওয়ার কথাও স্বীকার করেছে বলে উঠে আসে। কিন্তু মামলা চলাকালীন রেহমানের মৃত্যু হয়। তার দুই ছেলে এই মামলাটি টেনে নিয়ে যায়।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্ট বলে যে রেন্ট কন্ট্রোলারের সিদ্ধান্ত সঠিক। রেহমানের ছেলেরা আন্ডারটেকিং দেয় যে তারা শান্তিপূর্ণ ভাবে বাড়ির দখল ছেড়ে দেবে। তবে বিকল্প ব্যবস্থা করে নেওয়ার জন্য সময় দেওয়ার অনুরোধ করে তারা। তখন ৩০ জুন অবধি সময় দেয় আদালত ও তাদের সমস্ত বকেয়া টাকা দিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।
কিন্তু ওই দুই ব্যক্তি উলটে গিয়ে অন্য একজনকে বাড়ি ভাড়া দিয়ে দিয়েছিল। এরপর ফের আদালতে যান সরবস্বতী। এরপর ক্ষুব্ধ হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এটি আদালত অবমাননা হয়েছে বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। ১৬ ডিসেম্বর আদালত ২৪ ঘণ্টা দেয় আদেশ মানার জন্য। এরপর আদালত ১৮ ডিসেম্বর জানতে পারে যে এখনও বাড়ি দেওয়া হয়নি সরস্বতী সিং। তাদের তিনমাসের জেল ও দুই হাজার করে জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের জেলের নির্দেশ দেয় আদালত।