সাহিত্যিক সলমন রুশদির লেখা ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ বইটি আমদানি থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বার্তা এল দিল্লি হাইকোর্টের তরফে। ৩৬ বছর পর এই বই থেকে নিষেধাজ্ঞ তোলার বার্তা দিয়েছে কোর্ট। বিতর্কিত এই বই এককালে ব্যাপক চর্চার ঝড় তুলেছে। এবার এই বই নিষিদ্ধ হতেই তা ভারতে আমদানি করতে আর অসুবিধা নেই, দিল্লি কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী। সংবাদমাধ্যম 'বার অ্যান্ড বেঞ্চ'র খবর অনুযায়ী, এই বই নিয়ে মামলা দিল্লি হাইকোর্টে উঠে ছিল। সেই মামলাতেই এই রায় দেয় কোর্ট। এই মামলা দিল্লি হাইকোর্ট ক্লোজ করে।
ঘটনা ১৯৮৮ সালের। সেই সময় কেন্দ্রের সরকারে ছিল কংগ্রেসের রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বাধীন সরকার। সেই সময়ই বিতর্কিত ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ ভারতে নিষিদ্ধ হয়। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে একটি মামলা গত ২০১৯ সাল থেকে দিল্লি কোর্টে পড়েছিল। বিচারপতি রেখা পাল্লির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই পিটিশনের পর্যবেক্ষণ করে। কোর্টের পর্যবেক্ষণের পর নির্দেশে বলা হয়েছে, আবেদনকারী বইটির বিষয়ে সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণের অধিকারী হবেন। এই মামলায় কোর্টে পিটিশনার সন্দীপন খাঁ দাবি করেন, তিনি কোর্টে বইটি আনতে পারছেন না, কারণ, এই বই আমদানি নিষিদ্ধ ভারতে। কারণ ‘সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ইনডায়রেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস’এর তরফে এই বই আমদানি নিষিদ্ধ বলে ১৯৮৮ সালের ৫ অক্টোবর নোটিফিকেশন (বিজ্ঞপ্তি) দেওয়া হয়। তিনি জানান, নোটিফিকেশন, ওয়েবসাইটেও নেই। এমনকি অফিসারদের কাছেও তা নেই। কোর্ট বিষয়টি লক্ষ্য করে যে, ওই নোটিফিকেশন কোর্টে পেশ করা হয়নি।
দিল্লি হাইকোর্টের বেঞ্চ জানায়,' যা দেখা যাচ্ছে, তাতে বিষয়টি নিয়ে জবাব দেওয়ার কথা যাঁদের তাঁদের মধ্যে কেউই ০৫/১০/১৯৮৮ তারিখের উল্লিখিত বিজ্ঞপ্তিটি উপস্থাপন করতে পারেনি যার জেরে আবেদনকারী কথিতভাবে ক্ষুব্ধ হয়েছেন।' কোর্ট বলছে, বিজ্ঞপ্তি যাদের তরফে এসেছে, তারাও তা কোর্টে পেশ করতে পারেনি এই মামলা কোর্টে চলাকালীন। যে মামলা ২০১৯ সালের। দিল্লি হাইকোর্টের বেঞ্চে থাকা বিচারপতি সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায় এই বক্তব্য রাখেন। ফলে কোর্ট ধরে নেয় যে এমন কোনও বিজ্ঞপ্তিই ছিল না। যার জেরে ৩৬ বছর বাদে ভারতে সলমন রুশদির লেখা বই ‘স্যাটানিক ভার্সোস’এর ওর নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়। উল্লেখ্য, এই বিতর্কিত ‘স্যাটানিক ভার্সোস’ বইটি নিয়ে বিভিন্ন সময় হুমকির মুখে পড়েন ব্রিটিশ আমেরিকান সাহিত্যিক সলমান রুশদি। ২০২২ সালে তাঁকে মঞ্চের মধ্যে ১২ বার ছুরি দিয়ে আঘাত করার ঘটনা ঘটে।