দিনভর ব্যাপক হিংসায় আখেরে কি ব্যর্থ হল কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিলের মূল উদ্দেশ্য? সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে বিবাদ থাকলেও চাপের মুখে সন্ধ্যার শেষ লগ্নে তড়িঘড়ি মিছিল বাতিল ঘোষণা করতে কার্যত বাধ্য হল সংযুক্ত কিসান মোর্চা। সেই হিংসার দায় আবার মাথা পেতে নিলেন স্বরাজ ইন্ডিয়ার সভাপতি যোগেন্দ্র যাদব।
মঙ্গলবার নির্ধারিত সময়ের আগেই মিছিল শুরুর নির্দিষ্ট রুটও মেনে চলেননি কৃষকদের একাংশ। তার জেরে দিনভর উত্তপ্ত হয়ে থাকল দিল্লি এবং দিল্লি লাগোয়া এলাকা। একাধিক এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধ হয়েছে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছে পাথর। পালটা লাঠি চালিয়েছে পুলিশ। ফাটানো হয়েছে কাঁদানে গ্যাসের শেল। দরজা ভেঙে লালকেল্লায় ঢুকে নিজেদের পতাকাও তুলেছেন কৃষকরা। তারইমধ্যে ট্র্যাক্টর উলটে মৃত্যু হয়েছে এক কৃষকের। বিক্ষোভকারীদের দাবি, তাঁর ট্র্যাক্টর লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছিল। আহতও হয়েছেন কয়েকজন বিক্ষোভকারী। খণ্ডযুদ্ধে আহত হয়েছেন পুলিশকর্মীরাও। হিংসাত্মক বিক্ষোভকারীদের হাতে পুলিশকেও মার খাওয়ার ছবি ধরা পড়েছে। কয়েকজনের মাথা ফেটে গিয়েছে। দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ৮৩ জন পুলিশকর্মী এবং একজন নাগরিক আহত হয়েছেন। শুধু আইটিও, তিলক মার্গ এবং লালকেল্লায় আহতের সংখ্যা ৭৭।
তার জেরে স্বভাবতই ট্র্যাক্টর মিছিল নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। এতদিন শান্তিপূর্ণভাবে যে আন্দোলন চলছিল, তা হিংসার আকার নেওয়ায় বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। একটি মহল থেকে কৃষকদের পদক্ষেপ সঠিক বলেও দাবি করা হলেও ৪০ টির বেশি কৃষক সংগঠনের মাথা সংযুক্ত কিষান মোর্চা সেই হিংসার নিন্দা করতে কোনওরকম কুণ্ঠাবোধ করেনি। পরে সন্ধ্যার শেষ লগ্নে কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিল বাতিল বলে ঘোষণা করে দেওয়া হয়। কৃষকরা যেখানে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, সেখানে ফিরে যেতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালানো হবে। পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে শীঘ্রই সিদ্ধান্ত হবে।
তবে দিনভর উত্তেজনার পর নিজের ঘাড়ে হিংসার দায় নিয়েছেন যোগেন্দ্র। তিনি বলেন, ‘যেভাবে বিষয়টি এগিয়েছে, তাতে আন্দোলনের অংশগ্রহণকারী হিসেবে লজ্জিত বোধ করছি এবং এই ঘটনার দায় নিচ্ছি আমি।’