গত কয়েকদিন ধরে ঝাড়খণ্ডে অঝোরে বৃষ্টি। তার জেরে ঝাড়খণ্ডে একের পর এক নদীর জলসীমা ক্রমশ বাড়তে থাকে। এদিকে নদীর জলের এই প্রচন্ড চাপের জেরে ডিভিসি মাইথন ও পাঞ্চেক থেকে জল ছাড়তে কার্যত বাধ্য় হয়। এমনটাই দাবি করা হচ্ছে।
তবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় অবশ্য গোটা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, গোটাটাই ম্য়ান মেড। এদিকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় গোটা পরিস্থিতিটা সম্পর্কে ঝাড়খণ্ডের মুখ্য়মন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে জানিয়েছিলেন।
এদিকে আগামী তিনদিন বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমান্ত সিল করে দিতে চেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সরকার। এর জেরে ঝাড়খণ্ড থেকে পণ্যবাহী যে সমস্ত গাড়িগুলি বাংলায় প্রবেশের চেষ্টা করছিল তারা আর আসতে পারবে না। তাদেরকে সীমান্তেই দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। তবে শেষ পর্যন্ত বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়েছে।
এর জেরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে কুলটি থানার আওতায় থাকা চৌরঙ্গী চৌকি এলাকায় পুলিশ ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে আসা সমস্ত ট্রাক আটকে দেয়। চেকিংয়ের পরে বহু ট্রাককে ফের ঝাড়খণ্ডে ফেরত পাঠানো হয়। ঝাড়খণ্ড সীমান্তে বিরাট ট্রাফিক জ্যাম শুরু হয়ে যায়।
আন্তঃরাজ্য সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়। এর জেরে বাংলাগামী যে ট্রাকগুলি ঝাড়খণ্ড থেকে বাংলার দিকে আসছিল সেগুলি লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। ডিভিসির সঙ্গে সমস্ত রকম সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে উল্লেখ করেছিলেন মমতা। তারপরই বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমান্তে একের পর এক ট্রাককে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। রাজ্যের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে যে অপরিকল্পিতভাবে ৫ লাখ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। যার জেরে বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত জলের তলায় চলে গিয়েছে।
এদিকে ঝাড়খণ্ডের এক বিডিও জানিয়েছেন, বাংলা থেকে ঝাড়খণ্ডের দিতে ট্রাক আসছে। যদি কোনও সমস্যা হয়ে থাকে তবে তো উভয় পক্ষেরই হওয়ার কথা। সেটা হয়নি।
এদিকে বন্যা দুর্গত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সেখানকার দুর্গত মানুষদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। সেই সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও চিঠি দিয়েছেন তিনি।
এদিকে ঝাড়খণ্ডের বিরোধী দলনেতা অমর কুমার বাংলার মুখ্য়মন্ত্রীর বক্তব্যে তীব্র আপত্তি করেছেন। সোশ্য়াল মিডিয়ায় তিনি জানিয়েছেন, সমস্ত স্ট্যান্ডার্ড মেনে মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়া হয়েছে। এর জেরে বাংলার কিছু এলাকায় পরিস্থিতি বিগড়ে গিয়েছে। ঝাড়খণ্ড থেকে বাংলায় গাড়ি যাতায়াত বন্ধ করা হয়েছে। জিটি রোডে বাংলার পুলিশ ঝাড়খণ্ডের এলাকার পর আর গাড়ি যেতে দিচ্ছে না। এর জেরে রাস্তায় গাড়ির সারি। হেমন্তজী আপনি সাহস নিয়ে মমতা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করুন। রাজনীতির জন্য ঝাড়খণ্ডের অর্থনীতিকে হাইজ্যাক করতে দেবেন না মমতা সরকারকে।