হরিয়ানার মানেসারে হিন্দু সংগঠনগুলির একটি মহাপঞ্চায়েতে মুসলিম দোকানদারদের বয়কট এবং তাদের ফটো আইডি যাচাইয়ের দাবি উঠেছিল। সেই মহাপঞ্চায়েতের দুই সপ্তাহ পরেই মানেসার সেক্টর ১-এর ৬০-৭০টি কুঁড়েঘরে বসবাসকারী মুসলমানরা নিজেদের ভিঁটে ছেড়ে চলে গেলেন। প্রতিবেশীরা বলছেন যে আইএমটি মানেসারের পিছনের এই কুঁড়েঘরে বসবাসকারী মুসলিম পরিবারগুলি ভয়ে রাতারাতি কোথাও চলে গিয়েছেন।
বাঙালি বাজারে ঝুপড়িতে থাকত অভিবাসী শ্রমিকদের এই পরিবারগুলো। তাদের বেশিরভাগই আশেপাশের হাউজিং সোসাইটিতে সাফাইকর্মী এবং গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করত। তবে তারাই রাতারাতি এই জায়গা ছেড়ে চলে গিয়েছে। পরিত্যাক্ত ঝুপড়িগুলিতে কিছু কাপড়, বাসনপত্র এবং জুতা এখানও পড়ে আছে। তারা যে তাড়াহুড়ো করে বাড়ি থেকে বের হয়েছে, তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। এলাকায় বসবাসকারী অন্যরা বলেছেন যে মুসলিম পরিবারগুলি বেশিরভাগই অসমের। মহাপঞ্চায়েতের পর থেকেই ভয়ের মধ্যে সেখানে বসবাস করছিল। এরপর রাতারাতি তারা এই এলাকা ছেড়ে চলে যায়।
ছত্তিশগড় থেকে মানেসারে এসে গৃহকর্মীর কাজ করেন বিমলা যাদব। ৪৫ বছর বয়সি এই মহিলা বলেন, ‘তারা রাতারাতি চলে গিয়েছে। এভাবে যাওয়ার কোনও কারণ নেই বলে আমি তাদের থামানোর চেষ্টা করি। কিন্তু তারা অসমে ফিরে যেতে বদ্ধপরিকর ছিল।’ অপর এক প্রতিবেশী বলেন, 'বাংলা থেকে অনেকে এখানে কাজ করতে এসেছিল মাত্র দুই মাস আগে। ইদের পর দেখলাম কিছু পরিবার চলে যাচ্ছে। আমি কারণ জানি না। তারা সবাই চুপচাপ চলে গেল।’
যে জমিতে কুঁড়েঘর তৈরি করা হয়েছে তার মালিক সতপাল। যখন ভাড়াটিয়ারা জায়গা ছেড়ে যেতে শুরু করে তিনি হরিদ্বারে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছিল যে মহাপঞ্চায়েতের পরে তারা ভয় পেয়ে গিয়েছিল। আমি তাদের কারও সাথে কথা বলতে পারিনি। যারা গিয়েছিলেন তারা সবাই অসমের বাসিন্দা।’ এর আগে ৩ জুলাই মানেসারের একটি মন্দিরে একটি মহাপঞ্চায়েতের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বজরং দল এবং অন্যান্য বেশ কয়েকটি হিন্দু সংগঠনের সদস্যরা মুসলিম দোকানদারদের বয়কটের ডাক দেয় এবং প্রশাসনকে তাদের নথি যাচাই করার জন্য দাবি জানায়।