দেশের জনকল্যাণ প্রকল্প ঘিরে এক বড়সড় জালিয়াতির হদিশ পেয়েছে অস্ট্রিয়া। ঘটনা সেদেশের এক দম্পতিকে ঘিরে। ৪০ বছর ধরে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে ১২ বার বিয়ে ও ডিভোর্স করেছেন বলে খবর। বিয়ের পর যাতে এই প্রকল্প থেকে তাঁরা টাকা পান সেই লক্ষ্য তো ছিলই, পাশাপাশি মহিলার আগের স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি বিধবা-পেনশন পেতেন। সেই টাকাও তিনি হাতছাড়া করতে চাইছিলেন না। এই সমস্ত দিক ঘিরেই তাঁদের এতবার বিয়ে ও ডিভোর্স বলে খবর।
পেনশন জালিয়াতির এক অবাক করা কাণ্ড ঘটিয়েছে এই দম্পতি। জার্মান সংবাদপত্র 'বিল্ড' এ এই খবর প্রথম প্রকাশ্যে আসে। জার্মানির পাশের দেশ অস্ট্রিয়ার বুকে এই ঘটনা ঘটেছে। সেখানে ৭৩ বছর বয়সী মহিলা এপর্যন্ত ৩৪২,০০০মার্কিন ডলার পেয়েছেন শুধু বিধবা পেনশন হিসাবে। ১৯৮১ সালে তাঁর প্রথম স্বামী মারা যান। এরপর তিনি ১৯৮২ সালে বিয়ে করেন আরেকজনকে। তাঁর সঙ্গেই ওই মহিলা ১২ বার বিয়ে ও ডিভোর্স করে গিয়েছেন। উল্লেখ্য, ১৯৮১ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর ওই মহিলা বিধবা পেনশন পাচ্ছিলেন। তবে পরের বছর নতুন বিয়ে করতেই সেই পেনশনের টাকা তাঁর পাওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু তিনি বিয়ে করার পর ‘সেভেরেন্স পেমেন্ট’ পেতে থাকেন। অস্ট্রিয়ান কোর্ট বলছে, তাঁর এই টাকা প্রাপ্তি অনুচিত ছিল।
এই দম্পতিকে ঘিরে অস্ট্রিয়ায় শুরু হয়েছে তদন্ত। তাঁদের আশপাশের পরিচিত থেকে আত্মীয়রা বলছেন, তাঁদের ডিভোর্স খুব একটা মেনে নেওয়ার মতো বিষয় নয়, কারণ অনেকেই তাঁদের একসঙ্গে হাসি খুশি জীবনেই থাকতে দেখেছেন। তাঁদের প্রথম ডিভোর্স ফাইল হয় বিয়ের ৬ বছর পর, কারণ দেখানো হয়, স্বামী ঘরে থাকেন না। ডিভোর্সের পর মহিলা পান বিধবা পেনশন। পরে তাঁদের বিয়ে হয়। তখন তিনি বিধবা পেনশনের টাকা হারান ঠিকই, কিন্তু তিনি ২৭০০০০ পাউন্ড ক্ষতিপূরণ পান। এই বিয়ে আর ডিভোর্সের পর্যায়ক্রম দশক ধরে চলে। সদ্য ২০২২ সালে মহিলার ডিভোর্সের পর তিনি বিধবা পেনশন না পেয়ে কোর্টে যান। পেনশন কর্তৃপক্ষ জানায়, তাঁদের বিয়ে ও ডিভোর্সের অদ্ভুত প্যাটার্ন রয়েছে, যা ঘিরে সন্দেহ রয়েছে। এরপর মামলা কোর্টে যেতেই ছক ফাঁস হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ ঘিরে তদন্ত শুরু হয়েছে।