রাতেই গাজিপুর সীমান্ত খালি হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের (বিকেইউ) মুখপাত্র রাকেশ তিকাইতের আবেগপ্রবণ ভাষণের পরই পালটে গেল পুরো ছবিটা। হরিয়ানা এবং পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ থেকে আরও কৃষক গাজিপুর সীমান্তে এসে জড়ো হচ্ছেন। আবারও গতি পাচ্ছে আন্দোলন। সেই পরিস্থিতিতে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে পুলিশ।
কোনও লিখিত নির্দেশ না থাকলেও বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যেই কৃষকদের গাজিপুর থেকে সরে যেতে বলেছিল উত্তরপ্রদেশ সরকার। মোতায়েন করা হয়েছিল তিন কোম্পানি সিএপিএফ, ছ'কোম্পানি পিএসি (উত্তরপ্রদেশের প্রভিশনাল আর্মড কনস্টেবুলারি) এবং হাজারের মতো পুলিশ। বিক্ষোভস্থলে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছিল। তারইমধ্যে রাকেশ তিকাইতের ভাই তথা কৃষক নেতা নরেশ জানান, বৃহস্পতিবার রাতেই কৃষকদের আন্দোলন শেষ হয়ে যাবে। কৃষকদের একাংশও আন্দোলনস্থল থেকে ফিরে যেতে শুরু করেন।
কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকেই ছবিটা পালটাতে শুরু করে। গাজিপুরের আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের মুখপাত্র। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, যতদিন না কেন্দ্র তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করছে, ততদিন আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে। যদি যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসন পুলিশ ব্যবহার করে, তাহলে গাজিপুরেই আত্মহত্যার হুঁশিয়ারি দেন রাকেশ। দাবি করেন, আরও কৃষক গাজিপুরের বিক্ষোভে যোগ দেবেন। সেইসঙ্গে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেরও ডাক দেন তিনি।
তাঁর আবেগতাড়িত ভাষণের পর থেকেই হরিয়ানা এবং পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকরা গাজিপুর সীমান্তে জমায়েত করতে শুরু করেন। প্রবল ঠান্ডার মধ্যেই রাতভর গাজিপুরে কাটাতে থাকেন কৃষকরা। গত ২৬ নভেম্বর থেকে সেভাবেই আন্দোলন চালিয়ে আসছেন তাঁরা। সেই পরিস্থিতিতে রাতেই আন্দোলনস্থল থেকে সরে যায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এবং পিএসি। সকালের দিকে আন্দোলনস্থল থেকে 'জয় জওয়ান, জয় কিষান', 'ইনকিলাব জিন্দাবাদ' স্লোগান তোলা হয়।
এদিকে, কৃষকদের সমর্থনে রাতের দিকে হরিয়ানার জিন্দে হাইওয়ে অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। এক বিক্ষোভরত কৃষক জানান, প্রতীকী ধরনা চালানো হচ্ছে। সংগঠনের মধ্যে বৈঠকের কৌশল তৈরি করা হবে। তারপর আজ (শুক্রবার) দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেবে। তিনি বলেন, 'যদি কৃষকরা কাঁদেন, তাহলে সরকার নিজের ক্ষমতা দিয়ে কী করবে।'