ইউনাইটেড পিপলস ফ্রন্ট ও কুকি ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন এই দুই কুকি উপজাতি সংগঠনের তরফে এদিন ন্যাশনাল হাইওয়ের রাস্তা অবরোধ তুলে নেওয়া হল অশান্ত মণিপুরের কাংপোকপিতে। ফলে গত ২ মাস ধরে মণিপুরে যে ন্যাশনাল হাইওয়ে স্তব্ধ ছিল,তা এবার থেকে খুলে যাচ্ছে। যারফলে মণিপুরে হিংসায় বিধ্বস্ত পরিস্থিতি থেকে খানিকটা স্বস্তি আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
দুই কুকি গোষ্ঠীর সংগঠন একত্রে এক বিবৃতিতে নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। উল্লেখ্য, এই দুই সংগঠন এমন একটি গোষ্ঠী যারা আগে উগ্রপন্থী গোষ্ঠী হিসাবে প্রমাণিত হলেও পরে তারা সরকারের সঙ্গে সন্ধির রাস্তা নেয়। তারাই জানিয়েছে যে, মণিপুরের কাংপোকপিতে তারা ন্য়াশনাল হাইওয়ের রাস্তা বনধ তুলে নিচ্ছে। এর আগে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ সমস্ত গোষ্ঠীকে বনধ তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন। তিনি মস্ত পক্ষকে শান্তির রাস্তা অবলম্বনের বার্তা দেন। এরপরই আসে এমন পদক্ষেপ।
এদিকে, ‘কুকি সিভিল সোসাইটি গ্রুপ কমিটি অন ট্রাইবার ইউনিটি’ যারা ২ মাস আগে এই রাস্তা অবরোধ ঘোষণা করেছিল, তারা এই অবরোধ তোলা নিয়ে কোনও সরাসরি বক্তব্য রাখেনি। কোনও বিবৃতিও প্রকাশ করেনি। ফলে কুকি সংগঠনগুলির মধ্যে ঐক্য নিয়ে উঠছে নান প্রশ্ন। উল্লেখ্য, মণিপুরের ওপর দিয়ে গিয়েছে দুটি ন্যাশনাল হাইওয়ে। একচি এনএইচ-২ অন্যটি, এএইচ-৩৭। এনএইচ-২ ইম্ফল-ডিমাপুরের রাস্তায় পড়ে। আর এনএইচ-৩৭ পড়ে ইম্ফল জিরিবামের রাস্তায়। উল্লেখ্য, মণিপুরে ৩ মে থেকে শুরু হয়েছে সংঘাত। সেই সময় থেকেই এই রাস্তাগুলি অবরোধ রয়েছে। কুকি সংগঠনগুলি এই এই রাস্তা অবরোধের ডাক দিয়েছিল। এদিক, অশান্ত মণিপুরে ক্রমাগত দাবানলের মতো ছড়িয়ে যায় বিদ্রোহের আগুন। ১০০ এরও বেশি মানুষ মারা যান সেখানে। হিংসা বিধ্বস্ত বহু এলাকায় মানুষকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়। সদ্য এক ত্রাণ শিবিরে বিপর্যস্তদের সঙ্গে দেখা করতে যান কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ওদিকে, এর আগে, দিল্লিতে এক হাইভোল্টেজ বৈঠক বসে মণিপুরের অশান্তির পরিস্থিতি নিয়ে। সেই বৈঠকে বারবার বিরেধীদের তরফে চাপ আসে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের পদত্যাগের দাবিতে। এরপর সদ্য এনবীরেন সিং পদত্যাগের পথে এগিয়েও ফিরে আসেন সমর্থকদের আর্জির জেরে। সব মিলিয়ে অশান্ত মণিপুরে কুকিদের তরফে এই পদক্ষেপ বেশ খানিকটা স্বস্তির বার্তা দিচ্ছে প্রশাসনকেও।