আমেরিকা প্রবল চাপের পর নড়েচড়ে বসল পাকিস্তান। মার্কিন সাংবাদিক ড্যানিয়েল পার্লের হত্যা মামলার মূলচক্রী ওমর সৈয়দ শেখকে খালাস করে দেওয়ার যে রায় দিয়েছিল পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট, তা পুনর্বিবেচনার আর্জি দায়ের করল সিন্ধ সরকার। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সেই আর্জি শুনবে সুপ্রিম কোর্ট।
২০০২ সালে পার্লকে অপহরণ করে নৃশংসভাবে হত্যা করা যায়। যিনি পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এবং জঙ্গি সংগঠন আল-কায়দার মধ্যে যোগসূত্র বের করার খবরের উপর কাজ করছিলেন। সেই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মূলচক্রীকে খালাস করে দেওয়ার রায়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয় আমেরিকা। পরিস্থিতির গুরুত্ব বোঝাতে নয়া মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিনকেন নিজেই বিবৃতি জারি করেন। 'মার্কিন নাগরিকের বিরুদ্ধে নৃশংস অপরাধের জন্য' আমেরিকার আদালতে ওমরের বিচারের প্রস্তাব দেওয়া হয়। অর্থাৎ ওমরকে আমেরিকার হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দেয় ওয়াশিংটন।
ব্লিনকেন বলেন, ‘ড্যানিয়েল পার্লের অপহরণ এবং হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত, তাদের খালাস করে দেওয়ার যে রায় দিয়েছে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট, তাতে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন আমেরিকা। তাদের ছেড়ে দেওয়ার যে কোনও প্রস্তাবে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে।’ মার্কিন বিদেশ দফতরের তরফে জানানো হয়, পার্ল হত্যাকাণ্ডের রায় নিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির সঙ্গে কথা বলেছেন ব্লিনকেন।
পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দেয় ভারতও। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘আমি আগেও জানিয়েছি যে সন্ত্রাসবাদে অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়ার হার পাকিস্তানে অত্যন্ত কম। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের মনোভাব কী, তা এই মামলা থেকে স্পষ্ট। নৃশংস জঙ্গি কার্যকলাপে ওমর সইদকে দোষী করতে না পারার বিষয়টি বিচারব্যবস্থার মশকরা।’ উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালের ডিসেম্বর ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের আইসি-৮১৪ বিমান ছিনতাই করেছিল পাকিস্তানি জঙ্গিরা। সেই ঘটনায় যাত্রীদের বিনিময়ে পাক বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ওমর ও জইশ-ই-মহম্মদের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ আজহার-সহ তিন জঙ্গিকে মুক্তি দিয়েছিল ভারত।