নতুন করে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল উৎপাদকদের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জারি করেছে নিষেধাজ্ঞা। এতে কি ভারতের শক্তি ক্ষেত্রে কোনও বড় সংকট আসতে চলেছে? এই লাখ টাকার প্রশ্ন আপাতত ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে জানা যাচ্ছে , ইতিমধ্যেই গন্তব্যের উদ্দেশে পাড়ি দেওয়া অপরিশোধিত তেল আসতে থাকবে আগামী ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ ধরে, ফলে দিল্লির কাছে সময় রয়েছে এর মধ্যে বিকল্প খুঁজে বের করার। এমনই দাবি এক সিনিয়র সরকারি আমলার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সিনিয়র সরকারি আমলা বলছেন,' বাণিজ্যিকভাবে কার্যকর বিকল্প খুঁজে বের করার জন্য আমাদের যথেষ্ট সময় আছে।' মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেখানে ইতিমধ্যেই রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল নিয়ে কড়া অবস্থানের রাস্তা নিয়েছে, সেখানে আসন্ন ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কথা সমাধানের রাস্তা খোঁজার অপশনকেও বাদ রাখছে না দিল্লি। এমনই বার্তা দিয়েছেন ওই অফিসার। তিনি বলছেন,'প্রথাগত সরবরাহকারী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, গায়ানা, কানাডা, ব্রাজিল এবং সুরিনামের মতো নতুন উৎপাদক উভয়ের অতিরিক্ত ক্ষমতার কারণে ভারত অপরিশোধিত সরবরাহ নিয়ে চিন্তিত নয়।' তবে তেলের দামের ওঠানামা, ভারতের জন্য এখনও মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে। কারণ দেশের অপরিশোধিত তেলের চাহিদার ৮৭ শতাংশই ভারত আমদানি করে। এই বিষয়ে আরও এক অফিসার বলছেন,'বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত তেলের দাম এবং বাজারের অস্থিরতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ প্রধান অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে। ভারত, মার্কিন সরকারের সাথে নিযুক্ত রয়েছে এবং আশা করা যায় যে রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের প্রশাসন আগামী সপ্তাহে দায়িত্ব নেওয়ার সময় সহযোগিতা করবে।' এদিকে, মার্কিন ট্রেজারির আভাস, রুশ তেলের উপর মার্কিনি নিষেধাজ্ঞার কারণে তেলের দাম ৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। ভারত চাইছে, রাশিয়া থেকে ভারতে অপরিশোধিত তেল না এলেও ভারতের তেল বিপণন ও শোধনকারী সংস্থাগুলি যাতে কোনো সমস্যায় না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে। রাশিয়ার তেল উৎপাদক, গাজপ্রম নেফ্ট ও সুরগুতনেফ্তেগাস্ত সংস্থাকে টার্গেট করে গত শুক্রবারই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এদিকে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় নয়া পর্ব চালু হওয়ার জন্য ১২ মার্চ পর্যন্ত একটি ট্রানজিট পর্ব রাখা হয়েছে। তবে তারপর কী হবে? তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েইছে।
ভারতের এক সরকারি অফিসার বলছেন,' ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতা গ্রহণের পর ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তনের উপর নির্ভর করে বাজারের প্রভাব ধীরে ধীরে প্রকাশ পাবে।' সেক্ষেত্রে রাশিয়ার তেল সরবরাহের ক্ষেত্রে কোনও মোড় ঘুরবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে বহু জল্পনা। এছাড়াও, প্রশ্ন হচ্ছে, রাশিয়া থেকে তেল আমদানিতে যে ছাড় পাওয়া যেত, তা আদৌ পাওয়া যাবে কি না। এদিকে, ভারত বিকল্পের রাস্তা খুঁজে যাচ্ছে। সদ্য গায়ানায় মোদীর সফরে দুই দেশ, ক্রুড সোর্সিং সহ হাইড্রোকার্বন সেক্টরে সহযোগিতার কথায় সম্মত হয়েছে। সব দিক মিলিয়ে পরিস্থিতি কোনদিকে যায়, সেদিকে তাকিয়ে ভারতীয় কূটনৈতিক মহল।