এক কাপে চা, এক থালায় খাবার - বিস্কুট ও হাতের ছোঁয়ায় ভাইরাল হয়ে গেল আফজল ও সাবিনার প্রেমকাহিনি। আফজল বলেন, ‘আমাদের এভাবে ভালো লাগে।’ একইসুরে সাবিনা বলেন, 'কারণ আমরা একে অপরকে ভালোবাসি।'
বিশাল বড় দুনিয়ায় ছোট্ট এক সংসার গড়ে তোলা ২১ বছরের আফজল এবং ১৯ বছরের সাবিনার প্রেমকাহিনিতে বাইরে থেকে আহামরি কিছু নেই - ফ্যাকাশে, রংহীন জীবন মনে হবে। কিন্তু ভিতর থেকে যেন তাঁদের জীবনে বছরের ১২ মাসই বসন্ত। চারিদিকে ফুটে ওঠে ফুল, গজিয়ে ওঠে নতুন পাতা, নতুন প্রাণ। আর সেই নয়া প্রাণ, রঙচঙে দুনিয়ার হদিশ পান ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-র কলাম লেখক ‘দিল্লি ওয়াল্লা।’
আরও পড়ুন: Beer and Wine Prices: কমতে চলেছে বিয়ার ও ওয়াইনের দাম, আমদানি শুল্ক কমানোর পথে হাঁটছে এই রাজ্য
যে সন্ধ্যায় আফজল ও সাবিনার সঙ্গে কথা বলেন ‘দিল্লি ওয়াল্লা', সেদিন দিল্লির সরাইকালে খানে একটি চা দোকানের বেঞ্চে বসেছিলেন আফজল এবং সাবিনা। একটি কাপ থেকে চা খাচ্ছিলেন। বছরখানেক আগেই বাড়ির অমতে বিয়ে করেন তাঁরা। বিয়েতে রসগোল্লা এবং পেপসি খাইয়েছিলেন।
সাবিনা বলেন, ‘প্রেম করে বিয়ে করেছি আমরা।’ তারইমধ্যে আফজল বলে ওঠেন, ‘আমাদের বিয়ে মত ছিল না বাবা-মায়ের।’ আফজলের মতো সাবিনার বাবাও শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। তবে তাও কেন বাবা বিয়ের পক্ষে ছিলেন না, তা এখনও জানেন না সাবিনা। কিছুটা আন্দাজেই বলেন, ‘আমার মনে হয়, যেহেতু আমরা ছোটোবেলা থেকে একে অপরকে চিনতাম, তাই তারা আমাদের বিয়ের পক্ষে ছিল না।’
ছেলেবেলা থেকে চিনলেও প্রেমের শুরুটা হয়েছিল ২০১৯ সালে - বাজারে। কিছুটা লজ্জা পেয়েই সাবিনা বলেন, ‘ওর চুলের স্টাইলটা দারুণ। ও যেভাবে কথা বলে, আমার খুব ভালো লাগে।’ আফজল লজ্জা না পেলেও নিজের প্রিয় মানুষের কোন বিষয়টা ছেড়ে কোনটা বলবেন, তা যেন বুঝতে পারছিলেন না। তারইমধ্যে আফজল বলেন, ‘কোথা থেকে শুরু করব? ওর স্বভাব খুব ভালো। ও সারাক্ষণ যে দোপাট্টা পরে, সেটা আমার খুব ভালো লাগে। ’
বিয়ের পর ভাড়াবাড়িতে থাকতে শুরু করেন আফজল এবং সাবিনা। প্রতিদিন সন্ধ্যায় কাজ থেকে ফিরে সাবিনাকে রান্না করতে সাহায্য করেন আফজল। একরাশ গর্ব নিয়ে সাবিনা বলেন, ‘ও দিনের বেলা কাজ করে। তারপরও বাড়িতে এসে কাজ করে, যাতে আমার জীবন আরও সহজ হয়।’ দু'জনের যে মনমালিন্য হয় না, সেটাও নয়। দু'জনেরই অনুযোগ, ‘আমার ভালো কথা মোটেও শোনে না ও।'
আরও পড়ুন: ছাতার দাম এক লাখ টাকা, এদিকে বৃষ্টির জলও আটকায় না!
সেই মনমালিন্য, ভালোবাসার মধ্যে দিয়েই জীবনে এগিয়ে চলেছেন আফজল এবং সাবিনা। বিয়ের পর যে জীবনে প্রচুর পরিবর্তন এসেছে, তা বলতেও কুণ্ঠাবোধ করেন না। আফজল বলেন, ‘আমি আরও বেশি দায়িত্বশীল হয়ে উঠেছি, আরও বেশি পরিশ্রমী হয়েছি। আমি দিনে মাত্র ৩০০ টাকা উপার্জন করি। সেই টাকায় আপনি সংসার চালাতে পারলেন না। আমায় আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’ সাবিনা মেজাজটা হালকা করতে বলেন, ‘আমায় এখন মায়ের বকুনি খেতে হয় না।’