এবার ঘেরাটোপ থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছেন ইরানের বহু মহিলা। আরও তীব্র হচ্ছে হিজাব বিরোধী আন্দোলন। কার্যত দ্বিধাবিভক্ত ইরানের নারীরা। একদল হিজাবের পক্ষে আওয়াজ তুলছেন। বলছেন মাই হিজাব মাই স্টাইল। আর অপরপক্ষ হিজাবের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছেন। এমনকী এক তরুণী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কেবলমাত্র অন্তর্বাস পরে বসেছিলেন বলে খবর। তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়।
এদিকে ওই তরুণীকে গ্রেফতার করার পরেই তা নিয়ে শোরগোল চরমে। কেন কেবলমাত্র পোশাক বিধির জন্য কোনও তরুণীকে এভাবে গ্রেফতার করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। তাকে পুলিশ যাতে অত্যাচার না করে সেটার উপর নজর রাখছেন অনেকেই।
এদিকে আন্তর্জাতিক দুনিয়াও এই পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। কারণ এর আগে ২০২২ সালে সেপ্টেম্বর মাসে কুর্দ তরুণী মাহসা আমিনিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল হিজাব না পরার অভিযোগে। এমনকী পুলিশের হেফাজতে তাকে মারধর করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। তার জেরে মৃত্যুও হয়েছিল।
গাড়ির ভেতর হিজাব না পরে বসেছিলেন তিনি। এই ছবি দেখে শিউরে ওঠে পুলিশ। বিরাট অপরাধ! বাড়ির বাইরে বেরিয়েছেন অথচ হিজাব নেই।এরপর তাকে গাড়ি থেকে কার্যত টেনে নামানো হয়েছিল তাকে। তবে তার আগে মাহসা বলেছিলেন ব্যক্তি স্বাধীনতার কথা। তারপরেরটা পুরো রহস্যে ঘেরা। বলা হয়েছিল কিছুক্ষণ থানায় বসিয়ে রাখা হবে। তারপর ছাড়া হবে। আর ছাড়ার পরে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাঁকে। সেখানে কোমায় চলে যান তিনি। তারপর মৃত্য়ু। আর তারপরই ইরান জুড়ে শুরু হয় তীব্র প্রতিবাদ আন্দোলন। ফের ইরান জুড়ে মাথাচাড়া দিচ্ছে সেই আন্দোলন।
এদিকে সেই সময় একাধিক ক্ষেত্রে হিজাব পোড়ানো হয়েছিল বলে খবর। উত্তাল হয়ে উঠেছিল ইরান। দুই সাংবাদিক মাহসার মৃত্য়ু নিয়ে খবর করেছিলেন। সেই দুই সাংবাদিককে কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। একজনকে ১৩ বছর ও অপরজনকে ১২ বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছিল তারা মার্কিন সহায়তায় জাতীয় সুরক্ষার ক্ষেত্রে বড়সর গাফিলতির কাজ চলে।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে সেই সময় বলা হয়েছিল, ১৬ বছর বয়সি ওই কিশোরী হিজাব পরে বের হয়নি। এনিয়ে একটা সংঘাত তৈরি হয়।অফিসাররা তাকে ইসলামিক ড্রেস কোড মানার ক্ষেত্রে চাপাচাপি করেছিলেন বলে দাবি করা হচ্ছে। তখনই তিনি আহত হন।
তবে সেই আন্দোলনের আঁচ পুরোপুরি নিভে যায়নি। ফের নতুন করে মাথাচাড়া দিচ্ছে সেই আন্দোলন। হিজাব বিরোধী আন্দোলন।