আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করার ঘটনা ঘটেছে। আর কয়েকবছর আগে নয়াদিল্লির রাজপথে নির্ভয়া কাণ্ডের মতো ঘটনাও ঘটেছিল। এই দুটি ঘটনাই গোটা দেশকে নাড়িয়ে দেয়। এবার আগ্রায় রাতে মহিলারা কতটা সুরক্ষিত তা সরেজমিনে দেখতে পথে নামলেন পুলিশের অ্যাসিসটেন্ট কমিশনার সুকন্যা শর্মা। এই মহিলা পুলিশ অফিসার একেবারে সাধারণ পোশাকে পর্যটক সেজে ঘুরে বেড়ালেন আগ্রার রাজপথে। তাও আবার অটোরিকশা করে। একজন আইপিএস অফিসার হিসাবে মহিলাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরখ করতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। আর এখানের জরুরি হেল্পলাইন নম্বর ১১২ কেমন কাজ করে সেটাও দেখলেন।
আগ্রা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে বাইরে পর্যটক সেজে দাঁড়িয়ে ছিলেন এই ৩৩ বছরের মহিলা আইপিএস অফিসার। দেখে চেনার উপায় নেই তিনি পর্যটক না পুলিশ। আর সেখান থেকেই ফোন করলেন জরুরি নিরাপত্তার হেল্পলাইন নম্বরে। তাজমহলের কাছে একটি বাড়ির দিকে যাচ্ছেন। তাঁর পুলিশের সাহায্য লাগবে বলে জানান। ফাঁকা রাস্তা তাই ভয় লাগছে। পুলিশের সাহায্য জরুরি। কিন্তু নিজের পরিচয় দেননি এই আইপিএস। আসলে তিনি দেখতে চেয়েছিলেন ফোন পেয়ে কত দ্রুত অ্যাকশন নেয় পুলিশ। অপর প্রান্ত থেকে তখন তাঁকে নিরাপদ জায়গায় দাঁড়াতে বলা হয়। আর যাবতীয় তথ্য দিতে বলেন। এরপর উইমেন পেট্রলিং টিমের ফোন আসে আইপিএসের ফোনে। তখন তাঁকে জানানো হয় গাড়ি আসছে তাঁকে নিতে।
আরও পড়ুন: এবার ‘দুয়ারে মা ক্যান্টিন’ চলে এল, বানভাসী গ্রামবাসীদের দেওয়া হচ্ছে ভাত–ডাল–ডিম
রাতের অন্ধকারে যখন পুলিশের পেট্রলিং টিমের গাড়ি আসেন তখন নিজের পরিচয় দেয় মহিলা আইপিএস। আর জানান, পরীক্ষা করছিলাম পরিষেবার। আপনারা এই পরীক্ষায় পাশ করে গিয়েছেন। এরপর একটি অটোরিকশ ধরে এগিয়ে যান মহিলা আইপিএস অফিসার। এভাবেই রাতের শহরে মহিলাদের নিরাপত্তা পরীক্ষা করলেন ওই আইপিএস। পর্যটক সেজে রাতের শহরে ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন উত্তরপ্রদেশের আগ্রার অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার (এসিপি) সুকন্যা শর্মা। কোনও মহিলা বা যে কোনও ব্যক্তি রাতে বিপদে পড়লে পুলিশের সাহায্য চাইলে পান কিনা সেটাই সরেজমিনে দেখছিলেন তিনি। তবে এই পরীক্ষায় পাশ করে যায় পুলিশ।
এছাড়া নিজের পরিচয় গোপন রেখে অটোচালকের কাছে এই শহরে মহিলাদের নিরাপত্তা সম্পর্কে কিছু কথা জানতে চান। অটোচালক কথা বলতে বলতেই নিজের গন্তব্যে পৌঁছন মহিলা আইপিএস অফিসার। সেখানে পৌঁছে নিজের পরিচয় খোলসা করতেই অটোচালক হতবাক হয়ে যান। তবে এসিপির এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তিনি। শুধু অটোচালকই নন, এসিপির এই উদ্যোগ প্রকাশ্যে আসতেই শহরে তাঁর প্রশংসা শুরু হয়ে গিয়েছে। সমাজকর্মী দীপিকা নারায়ণ ভরদ্বাজ এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘প্রত্যেক শহরের পুলিশের এটা করা উচিত। সাধারণ মানুষের কেমন অভিজ্ঞতা হয় সেটা এভাবেই জানা যায়। খুব ভাল কাজ করেছেন এসিপি সুকন্যা শর্মা।’