চলে গেলেন প্রখ্যাত কৃষি অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ সেন। সোমবার হৃদরোগে তাঁর মৃত্যু হয়। বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। পূর্ববর্তী UPA সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের প্রাক্তন সদস্য ছিলেন অভিজিৎ সেন।
'রাত ১১টার দিকে হার্ট অ্যাটাক হয়। আমরা দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাই, কিন্তু পৌঁছানোর আগেই সব শেষ হয়ে গেল,' জানালেন তাঁর ভাই প্রণব সেন। তিনিও একজন বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ। জাতীয় পরিসংখ্যান কমিশনের চেয়ারম্যান এবং ভারতের প্রধান পরিসংখ্যানবিদ ছিলেন।
অভিজিৎ সেন অটল বিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারে কৃষি ব্যয় ও মূল্য কমিশনের (CACP) চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০০০ সালের জুলাই মাসের দীর্ঘমেয়াদী শস্য নীতি সংক্রান্ত উচ্চস্তরীয় কমিটির রিপোর্টের মূলে ছিলেন তিনি।
প্রখ্যাত এই রিপোর্টে সুপারিশ করা হয় যে, CACP-কে একটি ক্ষমতাপ্রাপ্ত নিয়মবদ্ধ সংস্থা করা হবে। তাদের হাতে ন্যূনতম সাপোর্ট মূল্য(MSP) নির্ধারণ করার ভার থাকবে। সেটা যাই হবে, তা সরকার মেনে নিতে বাধ্য হবে। উৎপাদনের 'C2' খরচের উপর ভিত্তি করে তা গণনা করা হবে। এই সুপারিশের মাধ্যমে কৃষকদের ফসল বিক্রির সময়ে নায্যমূল্যের দুশ্চিন্তা দূরীকরণের প্রচেষ্টা করা হয়।
অভিজিত্ সেন ১৯৮১ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি করেন। তাঁর থিসিসের বিষয় ছিল 'অর্থনৈতিক উন্নয়নে কৃষির প্রতিবন্ধকতা: ভারতের ক্ষেত্রে'। ১৯৮৫ সালে জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) অর্থনীতি ও পরিকল্পনা কেন্দ্রে যোগদান করেন। এই কেন্দ্রে প্রভাত এবং উত্সা পট্টনায়েক, কৃষ্ণ ভরদ্বাজ, অমিত ভাদুড়ি, দীপক নায়ার, সি পি চন্দ্রশেখর এবং জয়তী ঘোষের মতো অন্যান্য সনামধন্য অধ্যাপকরাও ছিলেন।
অধ্যাপক জয়তী ঘোষকে বিয়ে করেন অভিজিত্ সেন। জয়তী বাম-উদারপন্থী মতাদর্শের জন্য পরিচিত ছিলেন। সমালোচনামূলক অর্থনৈতিক চিন্তাধারার মাধ্যমে খ্যাতি অর্জন করেন তিনি।
অভিজিত্ সেনের কন্যা জাহ্নবী সেনও মা-বাবার মতোই কৃতী। প্রখ্যাত সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াইয়ার(The Wire)-এর ডেপুটি এডিটর তিনি।