অগস্তা ওয়েস্টল্যান্ড চপার দুর্নীতিতে তদন্ত প্রায় গুটিয়ে এনেছে সিবিআই। প্রাক্তন প্রতিরক্ষা সচিব তথা প্রাক্তন সিএজি শশীকান্ত শর্মা, প্রাক্তন এয়ার ভাইস মার্সাল জসবীর সিং পানেসর ও তিনজন বিমানবাহিনীর সদস্য়দের বিরুদ্ধে কেস দায়ের করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। ৩৭২৭ কোটি টাকার অগস্তা ওয়েস্টল্যান্ড দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই।
শশীকান্ত তখন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে যুগ্ম সচিব ছিলেন যখন ১২টি হেলিকপ্টার কেনা হয়। এই চুক্তিতে নানান অসঙ্গতি নিয়ে ইউপিএ আমলে তুলকালাম হয়। কিন্তু কেরিয়ারে দ্রুত উন্নতি করেন শশীকান্ত। এরপর ২০১১-২০১৩-র মধ্য়ে তিনি ছিলেন প্রতিরক্ষা সচিব। তারপর ২০১৭ অবধি সিএজি-র দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সেই সময়ই তার নাম জড়ায় এই দুর্নীতির সঙ্গে।
ইতালিয়ান আদালতে যে চূড়ান্ত রায় আসে তাতে JS Air শব্দটি বারবার ছিল। অনেকের অনুমান এটি Joint Secretary (Air) পদাধিকার প্রসঙ্গে বলা, যেই দায়িত্বে ২০১০ সালে ছিলেন শশীকান্ত শর্মা। ক্রিশ্চিয়ান মিকেল, যে এই চুক্তির জন্য ঘুষ দিয়েছিল অনেককে, তার নোটে ছিল এই রেফারেন্স। সেই সূত্র ধরেই এবার জাল গুটিয়েছে সিবিআই। এই সংক্রান্ত কেন্দ্রের কাছে যে রিকোয়েস্ট ডকুমেন্ট গিয়েছে, সেটি দেখেছে হিন্দুস্তান টাইমস। তবে এই পুরো ডিলে শর্মার বিরুদ্ধে অভিযোগ ঠিক কি, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়।
এক সিবিআই অফিসার বলেছেন যে তাদের সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট তৈরী আছে। কেন্দ্রের সবুজ সঙ্কেত পেলেই তারা ফাইল করবেন। ২০১৮ সালে ভারতে প্রত্যর্পণের পর এখন তিহাড়ে জেলে আছেন মিকেল। কীভাবে তিনি টাকা ছড়িয়ে অগস্তা ওয়েস্টল্যান্ডের পক্ষে চুক্তিটি আদায় করেছিলেন, তার বিস্তারিত বিবরণ আছে এই চার্জশিটে।
২০১৭ সালে সিবিআই প্রথম চার্জশিট পেশ করে যেখানে প্রাক্তন বায়ুসেনা প্রধান এসপি ত্যাগী, অগস্টা ওয়েস্টাল্যান্ডের প্রাক্তন সিইও সহ একগুচ্ছ উচ্চপর্যায়ের লোকের নাম ছিল। সবাই অভিযোগ অস্বীকার করে।
মিকেলের নোট অনুযায়ী, ২০০৮ সালেই এই চুক্তি পাওয়ার জন্য ৩০ মিলিয়ন ইউরো ছড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় মিকেল।
সিবিআই জানিয়েছে এখনও পর্যন্ত ৪১৫ কোটি টাকা কাদের ঘুষ দেওয়া হয়েছিল, সেটা ধরা গিয়েছে। সব মিলিয়ে ৪৫২ কোটি টাকা ঘুষ দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। এই ইতালীয় সংস্থা বরাত পাওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারের ২৬৬৬ কোটির লোকসান সহ্য করতে হয়। সব মিলিয়ে ৩৭২৬.৯ কোটি টাকার বরাত দিয়েছিল হেলিকপ্টার কেনার জন্য কেন্দ্র। এবার সেখানে নাম জুড়ে গেল প্রাক্তন সিএজি-র।