দেশের ইতিহাসে এই প্রথমবার একসঙ্গে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানো হল ৩৮ জনকে। প্রায় সাড়ে ১৩ বছর আগে আমদাবাদ বিস্ফোরণ মামলায় এই সাজা শোনানো হল আজকে। এই মামলায় মোট ৪৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে অধিকাংশ দোষীকেই ফাঁসির সাজা শোনায় আমদাবাদের বিশেষ আদালত। তাছাড়া মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া বাকি ১১ জনকে শোনানো হয়েছে জাবজ্জীবনের সাজা।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ২৬ জুলাই আমদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় বোমা বিস্ফোরণ হয়৷ সরকারি হাসপাতাল, পৌরনিগমের আওতায় থাকা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, আমদাবাদ পৌরনিগম পরিচালিত এলজি হাসপাতাল, বাস, রাস্তার ধারে রাখা সাইকেল, গাড়ি সমেত বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক মোট ২১টি বোমা হামলা চালায় দোষীরা৷ এই হামলায় ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ঘটনায় আরও প্রায় ২৪০ জন জখম হয়েছিলেন। ২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গার বদলা নিতেই নাকি এই হামলা চালানো হয়েছিল। হামলার দিন জখম ব্যক্তিদের যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তখন সেখানেও হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। ঘটনায় সামনে আসে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের নাম। সেই সময গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদী এবং রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন অমিত শাহ।
তদন্তে জানা গিয়েছিল, হামলায় ব্যবহৃত আইইডিগুলি তৈরি করেছিল ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের আজমগড় মডিউল। আমদাবাদে হামলার আগে সুরাতে এই আইইডিগুলো রাখা হয়েছিল। এর পেছনে ছিল রিয়াজ ও ইকবাল ভাটকলের গ্রুপ। কর্নাটকের জিহাদি গ্রুপের হাতও ছিল এই হামলার পিছনে। একটি ভুয়ো রেজিস্ট্রেশনযুক্ত গাড়ি ও খবর কাগজে মোড়া আইইডি দেখেই এই ঘটনায় বরোদা যোগের সন্ধান পান তদন্তকারীরা। কারণ খবরের কাগজটি ছিল বরোদা থেকে প্রকাশিত। এরপর বরোদায় তদন্তে নেমে একাধিকজনকে গ্রেফতার করা হয়। আজমগড়, দিল্লি, মুম্বইতেও তল্লাশি চলে। বড়সর মডিউলের সন্ধান পান তদন্তকারীরা।
এদিকে এদিন আদালত নির্দেশ দেয়, ৪৯ জন দোষীর প্রত্যেককে ২ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা করে জরিমানা দিতে হবে৷ এই বিস্ফোরণে মৃতদের পরিবার পিছু ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি এআর প্যাটেল৷ গুরুতর জখমদের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে এবং তুলনামূলক কম ক্ষতিগ্রস্তদের প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন বিচারপতি৷