আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু তকমা আদৌ ফেরানো হবে কিনা, সেই বিষয়ে এখনই নিশ্চিত না হওয়া গেলেও সংশ্লিষ্ট মামলায় শুক্রবার (৮ নভেম্বর, ২০২৪) সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ ১৯৬৭ সালের রায় খারিজ করে দিয়েছে।
এই ঘটনার পরই এ নিয়ে মুখ খুললেন এআইএমআইএম নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। এদিন দুপুরে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেছেন তিনি। যা থেকে স্পষ্ট, শীর্ষ আদালতের নির্দেশে ওয়াইসি যথেষ্ট খুশি।
তাঁর সোশাল মিডিয়া পোস্টে মূলত চারটি বিষয় উল্লেখ করেছেন ওয়াইসি। যার মোদ্দা কথা হল -
প্রথমত - তিনি আজকের এই দিনটিকে 'ভারতীয় মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন' হিসাবে উল্লেখ করেছেন। কারণ, ১৯৬৭ সালে শীর্ষ আদালতই আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু স্বীকৃতি খারিজ করে দিয়েছিল।
শুক্রবার সেই রায় খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ। ফলত, অনেকেই মনে করছেন, এবার হয়তো ফের একবার সংখ্যালঘু তকমা ফিরে পাবে এএমইউ।
সেই সম্ভাবনার জায়গা থেকেই ওয়াইসি মন্তব্য করেছেন, 'সংবিধানের ৩০ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে, সংখ্যালঘুদের পূর্ণ অধিকার রয়েছে এমন প্রশাসন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, যার সঙ্গে মানিয়ে চলা সংখ্যালঘুদের পক্ষে সহজ হবে।'
দ্বিতীয়ত - ওয়াইসি মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের এদিনের এই রায়ের ফলে ভারতে সংখ্যালঘুদের শিক্ষা গ্রহণের ভিত আরও মজবুত হবে। এর জন্য আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত অধ্যাপক ও পড়ুয়াদের অভিনন্দন জানিয়েছেন ওয়াইসি।
তাঁর যুক্তি, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কবে তৈরি হয়েছে, তাতে কিছু যায় আসে না। যদি কোনও প্রতিষ্ঠান সংখ্যালঘুরা প্রতিষ্ঠিত করে, তাহলে সেটা অবশ্যই সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান। কিন্তু, বিজেপি সেই যুক্তি মানেনি বলেও অভিযোগ করেছেন ওয়াইসি।
তৃতীয়ত - তাঁর আরও অভিযোগ, বিজেপি গত কয়েক বছর ধরে এএমইউ এবং জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর আক্রমণ করে গিয়েছে। এমনকী, সংখ্যালঘুদের মাদ্রাসা পরিচালনার অধিকারও বিজেপি কেড়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আসাদউদ্দিন ওয়াইসি।
চতুর্থত - এআইএমআইএম নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি মনে করেন,সুপ্রিম কোর্টের এই রায় দানের পর এএমইউ ও জামিয়ার সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ বন্ধ করা উচিত বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের।
তিনি উল্লেখ করেন, যেখানে এই দু'টি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্যেক পড়ুয়া পিছু ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়, সেখানে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক পড়ুয়ার জন্য ৬ লক্ষ টাকারও বেশি খরচ করা হয়। অথচ, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় এবং জামিয়া জাতীয় স্তরে আজও ভালো ফল করে।
ওয়াইসির আশা, এই রায়ের পর এএমইউ-এর কিষাণগঞ্জ কেন্দ্রটিও দ্রুত কাজ করা শুরু করবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৬৭ সালে সুপ্রিম কোর্ট আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু তকমা বাতিল করে দিলেও, ইন্দিরা গান্ধী দেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ১৯৮১ সালে এএমইউ-এর আইন সংশোধন করে এই প্রতিষ্ঠানে সংখ্যালঘুদের জন্য বিশেষ সংরক্ষণ চালু করা হয়। যদিও, ২০০৬ সালে ওই আইন খারিজ করে দেয় এলাহাবাদ হাইকোর্ট।