একদিকে যখন একের পর এক বিধ্বংসী ও প্রাণঘাতী বিমান দুর্ঘটনা ঘটছে, তখনই অল্পের জন্য রক্ষা পেল আরও একটি যাত্রীবাহী বিমান! এক্ষেত্রেও অবতরণের সময় ভয়ঙ্কর বিপদের মুখে পড়ে বিমানটি। শনিবার রাত ৯টা বেজে ৩০ মিনিট নাগাদ ভয়ঙ্কর এই ঘটনাটি ঘটে কানাডার হ্যালিফ্য়াক্স বিমানবন্দরে।
সিবিসি নিউজ-এর সম্প্রচারিত প্রতিবেদন অনুসারে, শনিবার রাতে বিমানবন্দরে অবতরণের সময়ে রানওয়েতেই হড়কে যায় বিমানটি। তার ফলে বিমানের একটি উইং বা ডানায় আগুন ধরে যায়।
ভয়াবহ সেই মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করেছেন বিমানের ভিতরে থাকা যাত্রীরা। সেই ছবি ইতিমধ্য়েই ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়।
ঘটনা প্রসঙ্গে আরও জানা গিয়েছে, ওই বিমানটি যাত্রা শুরু করেছিল সেন্ট জন'স থেকে। পুরো রাস্তা ঠিকঠাক আসার পর অবতরণের সময়ে হঠাৎই কিছু সমস্যা দেখা দেয়। বিমানটি প্রায় ২০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে বাঁদিকে বেঁকে যায়! এবং ধাক্কা লাগার একটি বিকট শব্দ হয়।
নিক্কি ভ্য়ালেন্টাইন নামে বিমানের এক যাত্রী জানিয়েছেন, সেই শব্দ ছিল বিকট ও ভয়াবহ! তাঁর দাবি, অবতরণের সময় বিমানের একটি চাকা তার নির্দিষ্ট জায়গায় ঠিকমতো ছিল না।
সিবিসি নিউজকে নিক্কি বলেন, 'বিমানটি ক্রমশ বাঁদিকে ঝুঁকে পড়ছিল। সেটি প্রায় ২০ ডিগ্রি হেলে গিয়েছিল বাঁদিকে। যখন এই ঘটনা ঘটছে, তখনই আমরা একটা বিকট শব্দ শুনেছিলাম। যেটা শুনতে একেবারে ক্র্যাশ সাউন্ডের মতো ছিল। বিমানের ডানাটি মাটিতে ঘষটে যাচ্ছিল। আমার দেখে মনে হয়েছিল, বিমানের সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনটিও মাটির উপর ঘষটে চলছিল!'
নিক্কি আরও জানিয়েছেন, এভাবেই একদিকে হেলে তীব্র গতিতে রানওয়ের উপর দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল বিমানটি। ততক্ষণে বিমানচালকরা ব্রেক কষে দিয়েছেন। তার ফলে শেষমেশ বিমানটি দাঁড়িয়ে পড়ে। কিন্তু, সেই মুহূর্তের আগে পর্যন্ত বিমানটি ওভাবেই ঘষটে এগোচ্ছিল। সেই দূরত্ব 'অনেকটা' ছিল।
ঘটনার যে বিবরণ নিক্কি সংবাদমাধ্যমকে দিয়েছেন, তা অতি বড় সাহসিরও বুক কাঁপিয়ে দেবে! তিনি বলেন, 'হঠাৎ আমরা দেখলাম, বিমানটি প্রবলভাবে ঝাঁকুনি দিতে শুরু করেছে! আমরা জানলা দিয়ে দেখতে পাচ্ছিলাম, বাঁদিকের ডানায় আগুন লেগে গিয়েছে। প্রবল ধোঁয়া ক্রমশ জানলার দিকে এগিয়ে আসছে।'
পরবর্তীতে, সংশ্লিষ্ট বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে এই ঘটনা নিয়ে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। তাতে জানানো হয়, এয়ার কানাডা ফ্লাইট ২২৫৯ একটি দুর্ঘটনার মুখে পড়ে এবং সেই বিমানটি পরিচালনা করছিল প্যাল এয়ারলাইন্স।
তবে, এই ঘটনার সময় ঠিক কতজন যাত্রী ও বিমানকর্মী ওই বিমানে ছিলেন, সেসব নিয়ে কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
যদিও স্বস্তির বিষয় হল, এই ঘটনায় কারও মৃত্যু হয়নি। বিমানটি রানওয়ের উপর থামার পরই দ্রুত তাঁদের বের করে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। তবে, বিমানের যাত্রীরা বলছেন, দুর্ঘটনার সময় তাতে অন্তত ৮০ জন সওয়ার ছিলেন। কারণ, বিমানটি প্রায় সম্পূর্ণ ভর্তি ছিল।