আবারও মাঝ আকাশে দুর্ঘটনার কবলে অমৃতসর-বার্মিংহামগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান। তবে পাইলটের বুদ্ধিমত্তায় অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানের যাত্রীরা। শনিবার অর্থাৎ ৪ অক্টোবর বার্মিংহাম বিমানবন্দরে নামার ঠিক আগে হঠাৎই সক্রিয় হয়ে যায় বিমানের জরুরি টারবাইন ব্যবস্থা বা র্যাম এয়ার টারবাইন (আরএটি)। তবে শেষ পর্যন্ত যাত্রীদের কোনও অসুবিধা হয়নি, নিরাপদেই অবতরণ করে বিমান।
বিমানকর্মীরা জানিয়েছেন, শনিবার অমৃতসর থেকে বার্মিংহাম যাচ্ছিল এআই ১১৭, বোয়িংয়ের ৭৮৭-৮ বিমানটি। অবতরণের কিছু আগে আচমকাই বিমানের র্যাম এয়ার টারবাইন (আরএটি) আপনা থেকে চালু হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত যদিও নিরাপদেই বিমানটি বার্মিংহামের মাটি ছোঁয়। এই টারবাইন সাধারণত ডুয়াল ইঞ্জিন ফেইল বা মূল বিদ্যুৎ ও হাইড্রলিক সিস্টেম একসঙ্গে ব্যর্থ হলে সক্রিয় হয়। কিন্তু সেই সময় বিমানের সব সিস্টেম ঠিকঠাক কাজ করছিল। ফলে আতঙ্ক না ছড়িয়ে, পাইলটরা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রেখে স্বাভাবিকভাবেই অবতরণ করান বিমানটিকে। এয়ার ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, '৪ অক্টোবর ২০২৫-এ আমৃতসর থেকে বার্মিংহাম যাওয়া ফ্লাইট এআই১১৭-এর ক্রু সদস্যরা চূড়ান্ত অ্যাপ্রোচের সময় বিমানের আরএটি সক্রিয় হওয়া লক্ষ্য করেন।ল্যান্ডিংয়ের পর সব বৈদ্যুতিক ও হাইড্রলিক সিস্টেম স্বাভাবিক কাজ করছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।' বিমানটি নিরাপদে বার্মিংহাম এয়ারপোর্টে অবতরণ করে, কিন্তু আরএটির সক্রিয়তার কারণ অনুসন্ধানের জন্য এটি তৎক্ষণাত্ গ্রাউন্ডেড করা হয়।
আরও পড়ুন-'জেলে থাকতে প্রস্তুত!' লাদাখ অশান্তিতে তদন্তের দাবি, বিশেষ বার্তা সোনম ওয়াংচুককের
এই ঘটনার জেরে বাতিল করা হয়েছে বার্মিংহাম থেকে দিল্লিগামী ফিরতি বিমান এআই১১৭। তবে বিমান সংস্থা জানিয়েছে, যাত্রীদের অন্য বিমানে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পরবর্তী ফ্লাইটে তাঁদের জায়গা দেওয়া হবে। এয়ার ইন্ডিয়ার এক মুখপাত্র বলেন, 'যাত্রী নিরাপত্তা কোনও মুহূর্তেই ক্ষুণ্ণ হয়নি। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে বিমানটিকে গ্রাউন্ডেড করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এরকম ঘটনা না ঘটে, তার জন্য বিস্তারিত টেকনিক্যাল পর্যালোচনা করা হচ্ছে।' এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে এখনও পর্যন্ত বিশদ তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। বিমানে ঠিক কতজন যাত্রী ছিলেন, তাও জানায়নি তারা। তবে বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কারণ আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার যে বোয়িং বিমানটি ভেঙে পড়ে, তার দু’টি ইঞ্জিন বিকল হয়ে গিয়ে থাকবে, অথবা হাইড্রোলিক/ইলেকট্রিকাল গোলযোগ ঘটে থাকবে বলেও তত্ত্ব উঠেছিল। ভেঙে পড়ার আগে বিমানের আরএটি সক্রিয় ছিল বলেও তথ্য সামনে আসে। চার মাসের পর এবার এই ঘটনা।
আরও পড়ুন-পতাকা হাতে প্যারেড! ইজরায়েলের হাতে নিগৃহীত গ্রেটা থুনবার্গরা, বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে
আরএটি হল বিমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা, যা ইঞ্জিনের দ্বৈত ব্যর্থতা বা প্রাইমারি পাওয়ার হারানোর ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় হয়। এটি একটি ছোট উইন্ডমিলের মতো ডিভাইস, যা বিমানের নিচে খোলা থাকে এবং বাতাসের প্রবাহ থেকে জরুরি বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে। এর মাধ্যমে ফ্লাইটের মৌলিক যন্ত্রপাতি, হাইড্রলিক চাপ এবং নিয়ন্ত্রণ সারফেসগুলি সক্রিয় থাকে।এবারের ঘটনায় যদিও প্রাইমারি সিস্টেম স্বাভাবিক ছিল, তবু আরএটির সক্রিয়তা ক্রুকে সতর্ক করে এবং তারা দ্রুত ল্যান্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।