শিল্পপতি রতন টাটার প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সারা দেশ, শোকস্তব্ধ তাঁর গুণমুগ্ধ অসংখ্য অনুরাগী। তেমনই একজন হলেন এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলট, ক্যাপ্টেন জোয়া আগরওয়াল। রতন টাটার সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাতের সৌভাগ্য হয়েছিল এই তরুণী বিমান চালকের। রতন টাটার প্রয়াণের পর সেই অভিজ্ঞতা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন তিনি।
নিজের এক্স হ্যান্ডেলে এই প্রসঙ্গে জোয়া লিখেছেন, একবার তাঁর বিমানে নিউ ইয়র্ক থেকে দিল্লি ফিরেছিলেন রতন টাটা। সফর শেষে জোয়া প্রবীণ শিল্পপতি, কিংবদন্তীতুল্য মানুষটির কাছে 'আবদার' করেন, যদি তিনি তাঁর সঙ্গে একটি ছবি তোলার অনুমতি দেন!
বলা বাহুল্য সেই আবেদনে সাড়া দিয়েছিলেন রতন টাটা। এরপরই তরুণী বিমান চালক তড়িঘড়ি ছবি তোলার জন্য উঠে দাঁড়াতে উদ্যত হন। কিন্তু, রতন টাটা তাঁকে থামিয়ে দেন। বলেন, পাইলটের আসন ছেড়ে ওঠার কোনও প্রয়োজন নেই। বদলে, তিনিই বিমান চালকের পিছনে দাঁড়ান এবং তাঁর আসনের পিছনের অংশে হাত রেখে 'পোজ' দেন!
তাঁর এই আচরণ তরুণী পাইলটের মন ছুঁয়ে যায়। সারা জীবনের জন্য অমূল্য এক মুহূর্ত অর্জন করেন তিনি!
জোয়ার কথায়, 'উড়ান শেষে আমি ওঁর কাছে একটা ছবি তোলার আর্জি রেখেছিলাম। এবং আমি যখনই উঠে দাঁড়াতে গেলাম, তিনি আমাকে থামিয়ে বললেন, 'ক্যাপ্টেন এটা আপনার সিংহাসন। আপনি এটা অর্জন করেছেন।' এরপর তিনি আমার পিছনে এসে দাঁড়ালেন - তাঁর এই আচরণ নেতৃত্ব প্রদান সম্পর্কে আমার বিশ্বাস আরও দৃঢ় করেছিল!'
এই আবেগঘন লেখার সঙ্গে, সেদিনের সেই অমূল্য মুহূর্তের ছবিটিও জোয়া তাঁর পোস্টে শেয়ার করেছেন। ইতিমধ্যেই লক্ষ লক্ষ মানুষ তাঁর সেই পোস্ট পড়েছেন, দেখেছেন। পোস্টটি রিপোস্ট করা হয়েছে অসংখ্যবার। লাইকের সংখ্যা ৩৫ হাজারেরও বেশি।
প্রসঙ্গত, বেশ কিছু দিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন রতন টাটা। যার জেরে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শেষমেশ বুধবার মুম্বইয়ের ওই হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ৮৬ বছরের শিল্পপতি।
তবে, রতন টাটাকে শুধুমাত্র শিল্পপতি বললে তাঁর পরিচয় সম্পূর্ণ হয় না। তিনি যেমন ছিলেন বহু গুণের অধিকারী, তেমনই তাঁর মানবতা বোধ তাঁকে সকলের থেকে স্বতন্ত্র আসন দিয়েছিল।
তাঁর প্রয়াণে কেবলমাত্র শিল্প জগৎ নয়, অতি সাধারণ জনতার মনও আজ ভারাক্রান্ত। তিনি যে কত বিরাট মনের অধিকারী ছিলেন, তার প্রমাণ রয়েছে ভূরি ভূরি। ক্যাপ্টেন জোয়া আগরওয়ালের অভিজ্ঞতাও তার ব্যতিক্রম ছিল না।