নিউইয়র্কের জেএফকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নয়াদিল্লিগামী বিমানে এক মহিলা সহযাত্রীর গায়ে মূত্র বিসর্জন করার অভিযোগ উঠেছে ব্যক্তির বিরদ্ধে। ঘটনাটি গত ২৬ নভেম্বর ঘটেছিল। সেই ঘটনায় এবার সাজার মুখে অভিযুক্ত যাত্রী। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশে দায়ের হয়েছে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি একজন ব্যবসায়ী। তিনি মুম্বইতে থাকেন। নাম শেখর মিশ্র। বয়স ৪০ বছরের কাছাকাছি। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি এই কাণ্ড ঘটানোর সময় মত্ত অবস্থায় ছিলেন। এদিকে দিল্লি বিমানবন্দরে নেমে সেই ব্যক্তি নিজের বাড়ি চলে যান। তবে এবার জানিয়ে দেওয়া হল, অভিযুক্ত ব্যক্তি ৩০ দিনের জন্য বিমানে ভ্রমণ করতে পারবেন না। পাশাপাশি মুম্বই ভিত্তিক ব্যবসায়ী শেখর মিশ্রের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪, ২৯৪, ৫০৯, ৫১০ নং ধারার অধীনে মামলা রুজু করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে তিন বছর পর্যন্ত মেয়াদের জন্য জেলে যেতে হতে পারে শেখরকে।
ভুক্তভোগী সহযাত্রী গোটা ঘটনা জানিয়ে টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরনকে একটি চিঠি লেখেন। এরপর ঘটনার তদন্ত শুরু করে এয়ার ইন্ডিয়া। এদিকে এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে 'নো-ফ্লাই' লিস্টে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানানো হয়েছিল সরকারের কাছে। এই বিষয়টি নিয়ে সরকারি কমিটি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয় যে ৩০ দিনের জন্য ওই ব্যক্তির বিমানে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। ডিসিজিএ-কে বিষয়টি জানানো হয়েছে। পরবর্তীতে আরও কড়া পদক্ষেপ করা হতে পারে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ, ৭০ বছর বয়সি এক বৃদ্ধার গায়ে মত্ত অবস্থায় মূত্র বিসর্জন করেছিলেন শেখর। সেই বৃদ্ধা এই ঘটনা সম্পর্কে কেবিন ক্রুকে অবগত করলেও অভিযুক্ত যাত্রীর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। এমনকী দিল্লি বিমানবন্দরে সেই বিমানটি অবতরণ করার পর অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজের বাড়ি চলে যান। তখন সেই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। তবে জাতীয় মহিলা কমিশন ঘটনাটি নিয়ে সক্রিয় হয়েছে। পুলিশে এফআইআর করা হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, এআই-১০২ নং উড়ানে ঘটনাটি ঘটেছে। নিউইয়র্ক বিমানবন্দর থেকে উড়ানটি টেকঅফ করার পর লাঞ্চ দেওয়া হয় যাত্রীদের। এরপর যাত্রীদের বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বিমানের লাইট বন্ধ করে দেওয়া। এরপরই অভিযুক্ত ব্যক্তি বৃদ্ধার আসনের সামনে এসে নিজের প্যান্টের জিপ খুলে মূত্র বিসর্জন শুরু করেন।
মূত্র বিসর্জন করার পরও অনেকক্ষণ নিজের গোপনাঙ্গ প্রদর্শন করে সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিলেন সেই ব্যক্তি। এরপর বাকি যাত্রীরা প্রতিবাদ শুরু করলে সেই অভিযুক্ত সেখান থেকে চলে যান। তার আগে অবশ্য সেই বৃদ্ধার শরীর, জামা কাপড়, জুতো, ব্যাগ, আসন সেই অভিযুক্তের মূত্রে ভিজে যায়। এরপরে কেবিন ক্রু সেই বৃদ্ধাকে কিছু জামাকাপড় দেয়। তবে অন্য আসন ফাঁকা না থাকায় সেই মূত্রে ভেজা আসনেই যাত্রীকে বসতে হয়। আসনের ওপর দিয়ে একটি চাদর বিছিয়ে দিয়েছিলেন এক কেবিন ক্রু।