উত্তর-পূর্ব দিল্লির দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণ করতে সেনা নামানোর দাবি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দিল্লি পরিস্থিতির দায়িত্ব সামলানোর ভার নিয়ে সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। তারপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে গিয়ে পরিস্থিতির খতিয়ান দেন তিনি।
সাংবাদিকেদের অজিত ডোভাল বলেন যে মানুষ ঐক্যবদ্ধ। কিছু অপরাধী গণ্ডগোল পাকাচ্ছে। মানুষ তাদের চিহ্নিত করছে। পুলিশ নিজের কাজ করছে। দ্রুত শান্তি আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন ডোভাল। যারা দেশকে ভালোবাসে সবাই শান্তি ও সম্প্রীতির সঙ্গে থাকা উচিত বলে জানান অজিত ডোভাল।
অন্যদিকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন সাধারণ মানুষ নয়, কিছু অপরাধী ঝামেলা করছে। হিন্দু, মুসলমান নিজেদের মধ্যে ঝামেলা করতে চায় না বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। এদিন পুলিশের তরফ থেকে জানান হয়ে যে বুধবার বড় কোনও ঝামেলার ঘটনা হয়নি। মোট ১০৬ জনকে গ্রেফতার ও ১৮টি এফআইআর করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানান হয়েছে।
কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জারি করা সত্ত্বেও এ দিন দুপুরে উত্তর প্রদেশ সীমান্ত লাগোয়া জোহরপুরীতে নতুন করে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গিয়েছে। অভিযোগ, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে দাঙ্গাবাজদের দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে এলাকায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখা গিয়েছে, রাস্তাজুড়ে ইটের বড়সড় টুকরো ছড়িয়ে রয়েছে। কয়েক জায়গায় রাস্তার উপরে চাপ চাপ রক্ত জমে থাকতেও দেখা যায়।
গলির ভিতরে বেশ কিছু বাড়ি ও দোকানে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে হামলাকারীরা। গলির ভিতর আশ্রয় নেওয়া অসহায় মানুষকে টেনে বের করে মারধর করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। চিত্কার করে তাঁরা সাহায্যের আবেদন জানালেও তাতে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
অগ্নিগর্ভ দিল্লিতে দাঙ্গায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে আপাতত ২৩, জখম হয়েছেন আরও ২৫০ জন। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, পরিস্থিতি সামলানোর দায় পুরোপুরি বর্তেছে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ডোভালের উপর।
জানা গিয়েছে, দাঙ্গা পরিস্থিতি সম্পর্কে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটে রিপোর্ট জমা দেবেন ডোভাল। মঙ্গলবার দিল্লি পুলিশ কমিশনার অমূল্য পট্টনায়েক এবং স্পেশ্যাল সিপি এস এন শ্রীবাস্তবকে নিয়ে আক্রান্ত জাফরাবাদ ও সীলমপুর এলাকা পরিদর্শন করেন। কথা বলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গেও। সূত্রের খবর, পরে পুলিশকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে ডোভাল সাফ জানিয়েছেন, কোনও শর্তেই হিংসা বরদাস্ত করা হবে না। পরিস্থিতি সামলাতে অতিরিক্ত পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
অন্য দিকে, এ দিন সকালে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, ‘এখানে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে পড়েছে। পুলিশ সব রকম চেষ্টা করেও হিংসা রুখতে ব্যর্থ হয়েছে। দাঙ্গা কবলিত এলাকায় সেনা নামানো হোক এবং কার্ফু জারি করা হোক। এই বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি লিখছি।’ আশ্চর্যের বিষয়, গতকালই দিল্লি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ঢালাও প্রশংসা করেছিলেন কেজরিওয়াল।