ভোটমুখী মহারাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্লোগান পূর্ণ সমর্থন করলেও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের মন্তব্যকে সমর্থন করলেন না উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির জোটসঙ্গী ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি)-এর নেতা অজিত পাওয়ার।
মঙ্গলবার অজিত সরাসরি জানান, তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদীর 'এক হ্যায়, তো সেফ হ্যায়' (একসঙ্গে থাকলেই সুরক্ষিত থাকা যায়) স্লোগানটিকে পূর্ণ সমর্থন করেন।
একইসঙ্গে, যোগী আদিত্যনাথের স্লোগান 'বাঁটেঙ্গে তো কাটেঙ্গে' (ভাগ করলে কেটে দেব)-কে একবাক্যে খারিজ করে দেন। অজিত পাওয়ারের বক্তব্য হল, যোগী আদিত্যনাথ যা বলেছেন, যা যথাযথ নয় এবং মহারাষ্ট্রের আদর্শগত ঐতিহ্যের সঙ্গে তার কোনও মিল নেই।
এদিন সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে অজিত পাওয়ার বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী যে স্লোগান দিয়েছেন, তাতে তো কোনও সমস্যা নেই। আমি তো এতে কোনও সমস্যা দেখছি না। আমরা যদি একসঙ্গে থাকি, তাহলে তো সকলেই সমৃদ্ধ হব।'
এরপরই যোগী আদিত্যনাথের মন্তব্যের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে অজিত পাওয়ার বলেন, 'বাঁটেঙ্গে তো কাটেঙ্গে কথাটা ঠিক নয়। উত্তরপ্রদেশ, বিহার এবং মধ্যপ্রদেশের মানুষের ভাবনা, চিন্তা অন্যরকম। কিন্তু, ওই ধরনের আবেগ এখানে কাজ করে না। মহারাষ্ট্রের মাটিতে এমন মন্তব্য করে কোনও লাভ নেই। এটাই আমার মনে হয়।'
এরইসঙ্গে, মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী যোগ করেন, 'মহারাষ্ট্র হল ছত্রপতি শাহু মহারাজের রাজ্য। মহাত্মা জ্যোতিরাও ফুলে এবং শিবাজী মহারাজের রাজ্য। মহারাষ্ট্রের মানুষ অন্যরকম। তাদের ভাবনা চিন্তাও অন্যরকম। যদি কেউ শাহুর, শিবাজীর, ফুলের এবং আম্বেদকরের আবেগ পরিত্যাগ করেন, তাহলে মহারাষ্ট্র তাকে রেয়াত করবে না।'
প্রসঙ্গত, এবারের মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে বারামতী আসনে এমভিএ, অর্থাৎ - অজিত পাওয়ারের বিরোধী শিবিরের প্রার্থী হয়েছেন তাঁরই ভাইপো যুগেন্দ্র পাওয়ার। তিনি এনসিপি-র শরদ পাওয়ার গোষ্ঠীর 'তুরুপের তাস'!
নিজের এহেন রাজনৈতিক এবং নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী সম্পর্কে অজিত পাওয়ার বলেন, '(যুগেন্দ্র) কখনই বারামতীতে আসতে ভালোবাসতেন না'! প্রসঙ্গত, বহুবারের বিধায়ক অজিত পাওয়ার এবারও তাঁর 'গড়' বারামতী বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই এনডিএ প্রার্থী হয়েছেন।
যুগেন্দ্র সম্পর্কে অজিত পাওয়ারকে আরও বলতে শোনা যায়, 'যুগেন্দ্রর রাজনীতি নিয়েই কোনও আগ্রহ ছিল না।... ও বারামতীতে আসতেও পছন্দ করত না। বরং, ও বিদেশে থাকতেই বেশি ভালবাসত। আমি জানি না, ওর ঠিক কী হল!'
অজিতের দাবি, বারামতী আসন ধরে রাখার বিষয়ে তিনি সম্পূর্ণ নিশ্চিত। তাঁর কথায়, 'বারামতীর মানুষ জানে, ওই এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে অনেকেই কাজ করেছেন। কিন্তু, এই উন্নয়নে আমার ভূমিকা যে সবথেকে বেশি সেটাও তাদের অজানা নয়। আমি ওখানে কাজ করেছি। আর আমার হয়ে আমার কাজই কথা বলবে।'