বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারকালীন তিক্ততা কি তবে অতীত হল? নাকি পুরোটাই আসলে সৌজন্য এবং পারিবারিক দায়বদ্ধতা? বৃহস্পতিবার এই জল্পনা শুরু হয় শরদ পাওয়ারের 'বাড়ি'তে তাঁর ভাইপো অজিত পাওয়ারের আগমনে!
বৃহস্পতিবার জন্মদিন ছিল প্রবীণ রাজনীতিক তথা এনসিপি (এসপি শিবির) প্রধান শরদ পাওয়ারের। এদিন ৮৪ বছর পূর্ণ করলেন তিনি। সূত্রের দাবি, সেই উপলক্ষেই নাকি কাকাকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাতে এসেছিলেন ভাইপো অজিত।
শরদের হাত ধরেই রাজনীতির অ-আ-ক-খ শিখেছিলেন অজিত। কিন্তু, বর্তমানে সেসব অতীত। যে কাকা তাঁকে রাজনীতিতে জায়গা পাকা করে দিয়েছিলেন, ইতিমধ্যেই সেই কাকার দল ভাঙিয়ে আলাদা দল গড়েছেন অজিত। যোগ দিয়েছেন কাকার বিরোধী শিবিরে।
কিছু দিন আগেই শেষ হওয়া মহারাষ্ট্র বিধানসভার নির্বাচনে শরদ গোষ্ঠী এবং অজিত গোষ্ঠীকে (অজিত পাওয়ার নিজেও) দেখা গিয়েছে, পরস্পরের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করতে!
এই প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার দেশের রাজধানী নয়া দিল্লিতে পরস্পরের মুখোমুখি হলেন মারাঠা রাজনীতির অন্যতম প্রধান দুই মুখ শরদ পাওয়ার ও অজিত পাওয়ার।
নয়া দিল্লিতে শরদ পাওয়ারের যে সরকারি বাসভবন রয়েছে, এদিন সেখানেই হাজির হন অজিত পাওয়ার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন প্রবীণ এনসিপি নেতা প্রফুল প্যাটেল, ছগন ভুজবল এবং সুনীল টাটকারে। পাশাপাশি, ছিলেন অজিতের স্ত্রী সুনেত্রা এবং বড় ছেলে পার্থ।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে এনসিপি ভেঙে দুই ভাগ হয়ে যায়। তারপর থেকে এই প্রথম ব্যক্তিগতভাবে শরদ পাওয়ারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলেন অজিত! সঙ্গে আনলেন পরিবারের এবং দলের অন্য সদস্যদেরও।
এদিনের এই সাক্ষাতের পর অজিত পাওয়ার বলেন, 'কিছু সম্পর্ক এমন থাকে, যা রাজনীতির ঊর্ধ্বে। রাজনীতি মানেই তো সমালোচনা নয়। যশবন্ত রাও চবন (মহারাষ্ট্রের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী) আমাদের শিখিয়ে ছিলেন, কীভাবে সৌজন্যের রাজনীতি করতে হয়। এবং আমরা তাঁকেই অনুসরণ করার চেষ্টা করে চলেছি।...'
'...এছাড়াও, আমরা একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। তার মধ্যে পরভণী হিংসা যেমন ছিল, তেমনই ছিল সংসদের অচলাবস্থা, রাজ্য মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ এবং অন্যান্য নানা ঘটনা ও ইস্যু।'
প্রসঙ্গত, এবারও মহারাষ্ট্রের বারামতী আসন থেকে ভোটে লড়ে জিতেছেন অজিত পাওয়ার। হারিয়েছেন তাঁরই ভাইপো এবং শরদের আর এক ভাইপোর ছেলে যুগেন্দ্র পাওয়ারকে। যুগেন্দ্র এদিনের এই সাক্ষাৎ পর্ব সম্পর্কে জানিয়েছেন, পুরোটাই আসলে পারিবারিক বিষয়। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।
এদিন শরদ পাওয়ারের সঙ্গে সশরীরে সাক্ষাৎ করার আগে নিজের এক্স হ্যান্ডেলেও কাকাকে জন্মদিনের শুভকামনা জানান অজিত। কিন্তু, তিনি যে সটান কাকার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন, সেটা আগে থেকে ঘোষণা করেননি।