ধর্মীয় অপরাধে দোষী সাব্যস্ত এবং সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পর শিরোমণি অকালি দলের সংশ্লিষ্ট নেতাদের মঙ্গলবার সম্পূর্ণ অন্য ভূমিকায় দেখা গেল! অকাল তখতের তরফে তাঁদের যে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল, সেই অনুসারে - এদিন তাঁরা অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দিরে শৌচালয় পরিষ্কার করলেন।
উল্লেখ্য, ধর্মীয় অপরাধ করার জন্য আগেই শিরোমণি অকালি দলের প্রাক্তন সভাপতি তথা রাজ্যের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সুখবীর সিং বাদল-সহ পূর্বতন অকালি মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল শিখ সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন অকাল তখত। যার জেরে পরবর্তীতে তাঁদের সকলকে একাধিক শাস্তি দেওয়া হয়। সেই শাস্তি তালিকায় ছিল - শৌচালয় পরিষ্কার, বাসন মাজা ও ধোওয়া, জুতো পরিষ্কার করা ইত্যাদি।
মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমে যে ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে, তাতে দেখা যায় - দলজিৎ সিং চিমা, বিক্রম সিং মাজিথিয়া, মাহেশিন্দর সিং গারেওয়ালের মতো অকালি নেতারা অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দিরের শৌচালয় পরিষ্কার করছেন। যা শিখ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান উপাসনাস্থল হিসাবে পরিচিত।
সাজা শোনানো হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সুখবীর সিং বাদলকেও। হিসাব মতো, তাঁরও এদিন বাসন মাজা এবং জুতো পরিষ্কার করার কথা ছিল। কিন্তু, পা ভেঙে যাওয়ায় সেই কাজ করতে পারেননি তিনি।
এর আগের দিন পায়ে প্লাস্টার বেঁধে, হুইল চেয়ারে বসে অকাল তখতের শুনানিতে হাজির হয়েছিলেন তিনি। সেই অবস্থাতেই তাঁর বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করা হয়েছিল। সুখবীর সিং বাদলকে সেবাদারের ভূমিকায় দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছিল।
সেই অনুসারে, এদিন তাঁকে দেখা যায়, স্বর্ণ মন্দিরের মূল ফটকের বাইরে হুইল চেয়ারেই বসে রয়েছেন। তাঁর পরনে রয়েছে সেবাদারদের জন্য নির্দিষ্ট নীল রঙের পোশাক। একই শাস্তি ভোগ করেন অকালি দলের আরও এক প্রবীণ নেতা সুখবীর সিং ধিন্দসা। বয়সের কারণে তাঁকেও হুইল চেয়ারে বসে সেবাদারের ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়।
দুই প্রবীণ রাজনীতিকের গলায় ঝোলানো ছিল ছোট ছোট বোর্ড। তাতে, তাঁরা যে অপরাধ করেছিলেন, সেই সংক্রান্ত তথ্য লেখা ছিল! এদিন এই দুই নেতাই এক ঘণ্টা করে সেবাদারের ভূমিকা পালন করে নিজেদের শাস্তি ভোগ করেন।
এদিকে, এই গোটা ঘটনার জেরে সুখবীর সিং বাদল তাঁর বাবার উত্তরসূরি হিসাবে যে 'ফখরে-এ-কোয়াম' উপাধি এত দিন ধরে ভোগ করতেন, তা তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সাল থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে যে শিখ নেতারা শিরোমণি অকালি দল মন্ত্রিসভার সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তাঁদের এই ধর্মীয় অপরাধের শাস্তি ভোগ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট পাঁচজন সিং সাহিবাঁ তাঁদের বিরুদ্ধে এই শাস্তি ঘোষণা করেছেন।