ইংরেজি বর্ষবরণের অনুষ্ঠান আসলে 'হারাম'! তাই মুসলিমদের ওসব নিউ ইয়ার সেলিব্রেশন-টেশন করা যাবে না! এমনই ফতোয়া জারি করেছেন সর্বভারতীয় মুসলিম জামাতের জাতীয় সভাপতি শাহবুদ্দিন রাজভি বরেলভি!
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতীয় মুসলমানদের উদ্দেশে ওই ফতোয়া জারি করেছেন রাজভি। তাঁর বক্তব্য, নিউ ইয়ার সেলিব্রেশন আদতে একটি অ-মুসলিম অনুষ্ঠান। তাই তা মুসলমানদের জন্য 'হারাম'। সেই কারণেই ভারতীয় মুসলমানদের ইংরেজি নববর্ষ পালন করতে বারণ করেছেন রাজভি!
ওই ফতোয়ায় রাজভি লিখেছেন, ইসলামে নাচ, গান করা একেবারেই নিষিদ্ধ (হারাম)। আর নিউ ইয়ার সেলিব্রেশনে তো নাচ, গান হবেই। তাই ওসব করা যাবে না।
তিনি কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, শরিয়ত অনুসারে এই ধরনের আচরণ আদতে অপরাধমূলক কাজ। তাই মুসলিম যুবসমাজের এর থেকে দূরে থাকা উচিত।
এখানেই থেমে থাকেনি মৌলানা সাহেব। তিনি বলেন, ক্রিসমাস বা নিউ ইয়ার পালনের মতো অনুষ্ঠানগুলি কঠোরভাবে ইসলামে নিষিদ্ধ। তাই, মুসলিমদের কখনই এই ধরনের কোনও অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া উচিত নয়। এমনকী, ইংরেজি নববর্ষ পালনকে খ্রিস্টানদের অনুষ্ঠান বলেও দাবি করেন রাজভি।
তিনি বলেন, খ্রিস্টানরা যেহেতু ক্রিসমাস পালন করেন, এবং যেহেতু সেটা তাঁদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান, তাই মুসলিমদের ওই অনুষ্ঠান পালন করা চলবে না। ঠিক একই কারণে তাঁরা ইংরেজি নিউ ইয়ার সেলিব্রেশনেরও অংশ হতে পারবেন না। তিনি নির্দিষ্ট করে বলেন, 'ইসলাম কঠোরভাবে এই ধরনের অনুষ্ঠানের বিরোধী'।
এরপরই নিউ ইয়ার সেলিব্রেশন নিয়ে তাঁর আপত্তি একগুচ্ছ কারণ তুলে ধরেন রাজভি। তিনি বলেন, বর্ষবরণের নামে লোকে নাচ-গাান করে, আতসবাজি জ্বালায়, চিৎকার করে, মদ্যপান করে, জুয়া খেলে, হাততালি দেয়, বাঁশি বাজায়!
মুসলিমরাও এই সমস্ত অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছে। যা একদম ঠিক নয়। কারণ, ইসলামি শরিয়ায় এসবই নিষিদ্ধ। তাই কোনও মুসলমান যদি এই ধরনের কোনও অনুষ্ঠানে যোগদান করেন, তাহলে শরিয়া অনুসারে, তিনি দোষী হিসাবে গণ্য হবেন!
যদিও এই ফতোয়া নিয়ে মুসলিম সমাজের অন্দরেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, এই ফতোয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সুফি ফাউন্ডেশনের জাতীয় সভাপতি কশিশ ওয়ারসি।
তাঁর মতে, এই ঘটনা তথাকথিত 'ফতোয়া ফ্য়াক্টরি'র ফসল! তাঁর অভিযোগ, মুসলিমদেরই একটা অংশ এভাবে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের উপর নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপের অপচেষ্টা করে চলেছে।
ওয়ারসির প্রশ্ন, কীভাবে এমন কিছু বিষয়কে বেছে বেছে নিষিদ্ধ বলে দেগে দেওয়া যেতে পারে? তাঁর আরও অভিযোগ, মুসলিম সমাজের অভ্যন্তরে আরও অনেক গুরুতর সমস্যা রয়েছে। সেগুলির সমাধানসূত্র বের করার কোনও চেষ্টা করা হচ্ছে না। অথচ, এইসব ফতোয়া জারি করা হচ্ছে।