সংশোধিত নাগরিক আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসক কাফিল খানের ভাষণে ঘৃণা ও হিংসায় মদত দেওয়ার কোনও চেষ্টা ছিল না। মঙ্গলবার এই মন্তব্য করল এলাহাবাদ হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, ওই ভাষণের জেরে কাফিল খানকে আটক করা হয় এবং তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় সুরক্ষা আইনে মামলাও করা হয়।
এ দিন প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুর ও বিচারপতি সৌমিত্রা দয়াল সিংকে নিয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, কাফিল খানের ওই ভাষণের মধ্যে এমন কোনও উপাদানই ছিল না যা কোনও যুক্তিবাদী মানুষকে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে উৎসাহিত করে। এই মন্তব্যের জেরে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার জন্য সরাসরি আলিগড়ের জেলাশাসকের সিদ্ধান্তকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হল।
কাফিল খানের সমগ্র ভাষণ বিশ্লেষণ করার পরে বেঞ্চ তার রায়ে জানিয়েছে, ‘বক্তা স্পষ্ট সরকারি নীতির বিরোধী এবং সেই মত ব্যাখ্যা করার জন্য তিনি কিছু উদাহরণ উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার মতো এক্ষেত্রে এমন কোনও জোরালো প্রমাণ ছিল না। ভাষণের কোনও অংশেই ঘৃণা ও হিংসা ছড়াতে কোনও উসকানিমূলক কথা ব্যবহার করা হয়নি। আলিগড় শহরের শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করারও কোনও ইন্ধন জোগানো হয়নি। বরং ভাষণে জাতীয় সংহতি ও ঐক্যের কথাই বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে শান্তির বার্তাও রয়েছে ওই ভাষণে। মনে করা হচ্ছে, জেলাশাসক গোটা ভাষণটি পড়েননি এবং তার সঠিক নির্যাস বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন।’
এ দিন রায় ঘোষণার পাশাপাশি চিকিৎসক কাফিল খানের বিরুদ্ধে থাকা জাতীয় সুরক্ষা আইনে যে সমস্ত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল তার সবই খারিজ করে দিয়েছে এলাহাবাদ হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। শুধু তাই নয়, তাঁকে গ্রেফতার করে আটক রাখার সিদ্ধান্তও অবৈধ ঘোষণা করেছে আদালত।
হাই কোর্ট জানিয়েছে, চিকিৎসক কাফিল খানের ভাষণে আলিগড় জেলায় জনমানসে উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্র।