কেউ বিবাহিত হলেই এটা ভেবে নেওয়া যায় না যে তাঁর আর্থিক অবস্থা স্থিতিশীল। এই আবহে সহানুভূতির ভিত্তিতে চাকরির ক্ষেত্রে ‘বিবাহিত’ যুক্তি দেখিয়ে আবেদন খারিজ করা যায় না বলে জানিয়ে দিল এলাহাবাদ হাই কোর্ট। উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এক কনস্টেবল কর্মরত অবস্থায় মারা যান। এই আবহে তাঁর ছেলে সহানুভূতির ভিত্তিতে চাকরির আবেদন জানান। তবে পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (এসটাবলিশমেন্ট) সেই দাবি আই বলে খারিজ করে দেয় যে আবেদনকারী বিবাহিত। এই আবহে চাকরিপ্রার্থী উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। চাকরিপ্রার্থীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত ডিআইজি-র নির্দেশ খারিজ করে দেয়।
এই আবহে আদালত বলে, ‘বিয়ে কখনও একজন ব্যক্তির আর্থিক অবস্থার নির্ণয়ক হতে পারে না। দেশের দরিদ্রতম ব্যক্তিরও বিবাহ করার অধিকার রয়েছে। উল্লিখিত ব্যক্তির আর্থিক অবস্থা নির্ণয়ক করতে বিবাহ একমাত্র মানদণ্ডে হতে পারে না। প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের এই ধরনের ব্যাখ্যা স্বেচ্ছাচারী। সহানুভূতিশীল নিয়োগের সঙ্গে বিবাহিত হওয়ার কোনও সম্পর্কই নেই।’
উল্লেখ্য, প্রেম শঙ্কর দ্বিবেদী নামক একজন কনস্টেবল ১৯৯৯ সালে মারা গিয়েছিলেন। সেই সময় প্রেমের স্ত্রী আবেদন জানান, যেহেতু তিনি অশিক্ষিত তাই সহানুভূতির ভিত্তিতে যেন তাঁর বড় ছেলেকে চাকরি দেওয়া হয়। তবে প্রেমের বড় ছেলে মানসিক ভাবে স্থিতিশীল ছিলেন না। তাই তাঁকে চাকরি দেওয়া হয়নি। এরপর ২০০৫ সালে প্রেমের স্ত্রী দাবি করেন যাতে সহানুভূতির ভিত্তিতে তাঁর ছোট ছেলেকে চাকরি দেওয়া হয়। তবে সেই আবেদনের ৩ বছরেও কোনও পদক্ষেপ করেনি কর্তৃপক্ষ। এরপর ২০১২ সালে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মৃত কনস্টেবলের স্ত্রী। আদালত পুলিশকে নির্দেশ দেয় ছয় সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে। এরপর ২০১৫ সালে প্রেমের স্ত্রীর আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়। যুক্তি দিয়ে বলা হয়, নিয়ম অনুযায়ী কর্মীর মৃত্যুর পাঁছ বছরের মধ্যে সহানুভূতির ভিত্তিতে চাকরির আবেদন করতে হয়। পাশাপাশি এও বলা হয় যে আবেদনকারীর আর্থিক অবস্থা স্থিতিশীল। বলা হয়, প্রেমের ছোট ছেলে বিবাহিত। যদি তাদের আর্থিক অবস্থা স্থিতিশীল না হত তাহলে নাকি তিনি বিয়ে করতেন না। এই আবহে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন চাকরিপ্রার্থী। উচ্চ আদালত জানিয়ে দেয়, চাকরিপ্রার্থী বিবাহিত, এই যুক্তিতে আবেদন খারিজ করা যায় না।