তিন তালাক নিষিদ্ধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। তারপরেও ‘তিন তালাক’-এর মতো প্রথা বিলুপ্ত হয়নি। এখনও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তিন তালাক দিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করেছেন বহু মানুষ। এবার স্ত্রীকে তিন তালাক দেওয়ার অভিযোগ উঠল মহারাষ্ট্রে।একাই হাঁটতে যাচ্ছিলেন স্ত্রী। সেই কারণে স্ত্রীকে তিন তালাক দিলেন স্বামী। এই ঘটনায় স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন মহিলা। তার ভিত্তিতে পুলিশ মহিলার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের থানে জেলায়। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: সম্ভলের ঘটনা দেখে পুলিশের প্রশংসা গৃহবধূর, রেগে গিয়ে তিন তালাক দিলেন স্বামী
জানা যাচ্ছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি মুম্বরা এলাকার বাসিন্দা। মঙ্গলবার তিনি তার ২৫ বছর বয়সি স্ত্রীর বাবাকে ফোন করে তিন তালাক দেওয়ার কথা জানান। তিনি জানান, তিন তালাক দিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করেছেন। কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন, তার স্ত্রী একাই হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। তার স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বুধবার ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ৩৫১(৪) ধারার অধীনে ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভীতি প্রদর্শন এবং মুসলিম নারী (বিবাহের অধিকার সুরক্ষা) আইনের অধীনে এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন বলে জানা গিয়েছে। এক পুলিশ অফিসার জানাচ্ছেন ঘটনার তদন্ত চলছে।
অন্যদিকে, সপ্তাহ তিনেক আগেই তিন তালাকের আরও একটি অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল থানে জেলা থেকেই। মহিলা একজন আইনজীবী বলে জানা গিয়েছে। ঘটনায় আইনজীবী তার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির ৪ সদস্যের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। অভিযোগ, তার কাছ থেকে ৪ লক্ষ টাকা চেয়ে নানাভাবে হয়রানি করেছেন তার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
আইনজীবী হলেন নাগপুরের বাসিন্দা। তবে স্বামীর সঙ্গে মহারাষ্ট্রের থানে জেলার ভিওয়ান্ডি এলাকায় বসবাস থাকেন। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তরা এই বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাইয়ের মধ্যে নাগপুরের থাকার সময় মহিলার কাছ থেকে ৪ লক্ষ টাকা দাবি করে।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ ২০১৭ সালের ২২ অগস্ট তিন তালাককে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছিল। সুপ্রিম কোর্ট ১৪০০ বছরের পুরনো এই প্রথাকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করার পাশাপাশি সরকারকে একটি আইন প্রণয়ন করতে বলেছিল। সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের পর কেন্দ্রীয় সরকার একটি আইন করতে গিয়ে বলে বা লিখে তিন তালাককে অপরাধ বলে ঘোষণা করেছে। এ অপরাধের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ডের বিধানও রয়েছে।