পেগাসাস সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলি সঠিক হলে বিষয়টি গুরুতর। কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে, আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার আগে আবেদনকারীরা পুলিশে অভিযোগ দায়েরের কোনও চেষ্টা করেননি। স্পাইওয়ার সংক্রান্ত ন'টি আবেদনের শুনানিতে বৃহস্পতিবার এমনটাই মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি এন ভি রামান্না এবং বিচারপতি সূ্র্যকন্তের বেঞ্চের তরফে বলা হয়, ‘বিষয়টিতে পুরোপুরি ঢোকার আগে আমাদের কয়েকটি প্রশ্ন আছে। যদি প্রতিবেদনগুলি সঠিক হয়, তাহলে অভিযোগ গুরুতর।' প্রধান বিচারপতি বলেন, 'আমি বলতে চাই না যে আবেদনগুলিতে কোনও ভিত্তি নেই। কয়েকজন আবেদনকারী প্রভাবিত হননি। কয়েকজনের দাবি, তাঁদের ফোন হ্যাক করা হয়েছে। কিন্তু ফৌজদারি অভিযোগ দায়েরের কোনও চেষ্টা করেননি তাঁরা।’ সেইসঙ্গে এডিটর্স গিল্ড অফ ইন্ডিয়া, সাংবাদিক এন রাম-সহ মামলাকারীদের পেগাসাস বিতর্ক নিয়ে তদন্তের জন্য কেন্দ্রকে আবেদনের কপির জমা দিতে বলেছে শীর্ষ আদালত, যাতে সেই নোটিশ গ্রহণের জন্য সরকারের কোনও প্রতিনিধি থাকেন। বিলম্বের বিষয়টি উত্থাপন করে বেঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে, সেই ২০১৯ সালে বিষয়টি সামনে এসেছিল।
গত ১৮ জুলাই ‘দ্য গার্ডিয়ান’, ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’, ‘দ্য ওয়ার’-সহ ১৭ টি সংবাদমাধ্যমের একটি গোষ্ঠীর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ‘পেগাসাস’ নামে পরিচিত একটি ফোন হ্যাকিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী হাজার-হাজার মানুষকে নিশানা করা হয়েছিল। ‘দ্য ওয়ার’-এর প্রতিবেদনে সোমবার দাবি করা হয়েছে, ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল। সম্ভাব্য তালিকায় তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও ছিল বলে ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।
যদিও কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের উপর সরকারি নজরদারি চলছে, সেই দাবির স্বপক্ষে কোনও মজবুত ভিত্তি বা সত্যতা নেই। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বলা হয়, ‘মৌলিক অধিকার হিসেবে বাকস্বাধীনতার প্রতিজ্ঞা হল ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভিত্তি। আমরা সর্বদা খোলামেলা কথোপকথনের সংস্কৃতিতে জোর দিয়ে একটি অবগত নাগরিক সমাজের পক্ষে থেকেছি।’ পরে পেগাসাস 'হ্যাক'-এর সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৈষ্ণ সংসদে দাঁড়িয়ে দাবি করেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট-সহ অতীতে এই ধরনের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে সবপক্ষ। এই অভিযোগের কোনও তথ্যগত ভিত্তি নেই।’ পুরো বিতর্কের সঙ্গে কেন্দ্র বা বিজেপির নাম জড়ানোর জন্য ছিঁটেফোটা প্রমাণও নেই বলে দাবি করেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ।