মঙ্গলবার বাংলাদেশে গ্রেফতার হওয়া হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিনের মামলা ওঠে। আর তার আগে তাঁর আইনজীবী রমেন রায়ের উপরে হামলার অভিযোগ তোলা হয়। তাঁর উপর ভয়াবহ হামলা হয়েছে বলে দাবি করেন কলকাতা ইসকনের মুখপাত্র তথা সহ-সভাপতি রাধারমন দাস। তিনি দাবি করেন, মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ওই আইনজীবী। আইসিইউতে ভর্তি হয়েছেন তিনি। এক্স হ্যান্ডেলে সেই ছবি পোস্ট করে গোটা বিষয়টি জানান ইসকন কলকাতার মুখপাত্র রাধারমন দাস। যদিও চট্টগ্রামের আইনজীবী সমিতির তরফে দাবি করা হয়েছে যে 'রমেন রায়' নামে কোনও আইনজীবী নেই। সমিতির তালিকায় সেরকম কোনও নাম পাওয়া যায়নি। সেইসঙ্গে ফ্যাক্টওয়াচের রিপোর্ট অনুযায়ী, চিন্ময় প্রভুর আইনজীবী হিসেবে নাম আছে শুভাশিস শর্মা। রমেন রায় বলে কারও নেই।
ফ্যাক্টচেকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস দাবি করেছেন, যেদিন চিন্ময় প্রভুকে যেদিন গ্রেফতার করা হয়েছিল, সেদিন একটি শাহবাগে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছিল। সেইসময় রমেন রায়কে কোপানো হয়েছিল। তার জেরেই আহত হন রমেন রায়। তবে তিনি চিন্ময় প্রভুর আইনজীবী নন।
এমনিতে মঙ্গলবার চিন্ময় কৃষ্ণদাসের জামিন মামলার শুনানি হয়নি। কারণ চট্টগ্রাম আদালতে কোনও আইনজীবীই আসেননি। সেই পরিস্থিতিতে আগামী ২ জানুয়ারি হিন্দু সন্ন্যাসী তথা বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্রের জামিনের মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। চট্টগ্রাম আদালতের পরিস্থিতি উত্তপ্ত ছিল। কড়া নিরাপত্তারও বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। তারইমধ্যে বিক্ষোভ মিছিল করেন আইনজীবীরা। পরবর্তীতেও বিক্ষোভ চলতে থাকে। তারইমধ্যে সরকারি আইনজীবীরা দাবি করেন, মঙ্গলবার আদালতে যা হয়েছে, তা থেকে প্রমাণিত হল যে বাংলাদেশে ন্যায়বিচার আছে। চিন্ময় প্রভুকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়ার জন্যই শুনানি পিছিয়ে দেওয়া হল। এটাই ‘ন্যায়বিচারের অংশ’ বলে দাবি করেন সরকারি আইনজীবীরা।
চিন্ময় প্রভুর গ্রেফতারি ও জামিনের মামলার ইতিবৃত্ত
১) গত ২৫ অক্টোবর একটি জনসভা হয়েছিল চট্টগ্রামে। সেটার প্রেক্ষিতে ৩০ অক্টোবরে ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা রুজু করা হয়েছিল। সেই তালিকায় চিন্ময় প্রভুর নামও ছিল।
২) ২৫ নভেম্বর ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্রকে গ্রেফতার করা হয়।
৩) ২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় প্রভুকে চট্টগ্রাম আদালতে পেশ করা হয়েছিল। সেদিন তাঁর জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল চট্টগ্রাম আদালত।
৪) ৩ ডিসেম্বর মামলার শুনানি হয়নি।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: একটি দাবির প্রেক্ষিতে প্রাথমিক প্রতিবেদনে তথ্যগত ভুল ছিল। নয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন সংশোধন করে দেওয়া হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।