শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের হিজাব পরার অনুমতি দেওয়া হলে তা ভারতের বৈচিত্র্য সম্পর্কে জানার সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। কর্ণাটকের হিজাব নিষিদ্ধ মামলায় বুধবার এমনই পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। বিচারপতি হেমন্ত গুপ্তা এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চের মতে, পোশাকে অভিন্নতা রাখাটাই কর্ণাটক সরকারের প্রধান যুক্তি, সেক্ষেত্রে এই বিষয়টি উপেক্ষা করা যায় না যে শ্রেণিকক্ষে বৈচিত্র্যের অনুমতি দেওয়া হলে পড়ুয়াদের সাংস্কৃতিকভাবে সংবেদনশীল করে তুলতে পারে।
আরও পড়ুন: ‘শিখদের পাগড়ির সঙ্গে তুলনা নয়’, হিজাব মামলায় অতি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের
গত ৯ দিন ধরে সুপ্রিম কোর্টে হিজাব মামলার শুনানি চলেছে। তাতে বেঞ্চের একাধিক পর্যবেক্ষণ এসেছে। বেঞ্চ জানায়, ‘কেউ এটাও বলতে পারে, এটি বৈচিত্র্য প্রকাশের একটি সুযোগ। আমাদের কাছে সমস্ত সংস্কৃতি, ধর্মের শিক্ষার্থী রয়েছে। দেশের বৈচিত্র্যের দিকে তাকান, তাদের প্রতি সাংস্কৃতিকভাবে সংবেদনশীল হোন।’
হিজাব নিষিদ্ধ করা নিয়ে কর্ণাটক সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন শিক্ষকরা। তাদের পক্ষে আইনজীবী আর ভেঙ্কটরমানি শিক্ষকদের পক্ষ থেকে হিজাবে আপত্তি জানান। তার পরেই বেঞ্চ প্রশ্ন তোলে, ‘শিক্ষার্থীরা স্কুল থেকে বের হয়ে গেলে আপনি কীভাবে তাঁদের তৈরি করবেন? যখন তাঁরা বিশ্বের মুখোমুখি হবেন, তাঁরা দেশের মহান বৈচিত্র্যের মুখোমুখি হবেন। সংস্কৃতিতে বৈচিত্র্য, পোশাকে বৈচিত্র্য, রান্নায় বৈচিত্র্য। সুতরাং, এটি তাদের প্রস্তুত করার একটি সুযোগও হতে পারে। এটি কিছু মূল্যবোধ জাগ্রত করার একটি সুযোগ হতে পারে। এটি একটি দৃষ্টিকোণও হতে পারে।
অন্যদিকে, কর্ণাটকের অ্যাডভোকেট জেনারেল প্রভুলিং কে নাভাদগির যুক্তি ছিল, শুধুমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার জন্যই হিজাব নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাঁর আরও যুক্তি, কোরানে উল্লিখিত সমস্ত কিছুকে একটি অপরিহার্য ধর্মীয় অনুশীলন হিসাবে গণ্য করা যায় না। কারণ এই ধরনের ধারণা অবাস্তব।