লকডাউনের মধ্যে গত বছরে প্রায় ৯ হাজার জনের রেললাইনে মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই পরিযায়ী শ্রমিক।রেলের তরফে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।লকডাউন ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর অনেক পরিযায়ী শ্রমিকরাই রেললাইন ধরে হেঁটে তাঁদের বাড়িতে পৌঁছোনোর চেষ্টা করেছিলেন।তখন করোর করোর মাঝপথেই মৃত্যু হয়েছে।কারো আবার ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে।
রেল মন্ত্রকের তরফে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বছর জানুযারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮ হাজার ৭০০ জনের।রাজ্যগুলির থেকে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তাতে আহত হয়েছেন ৮০৫ জন। রেলের মতে, লকডাউনের সময়ে হাইওয়ে থেকেও রেলপথকেই অনেকে বেছে নিয়েছিল।রেললাইন ধরে হেঁটে অনেকেই বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করলে কারো মাঝপথে মৃত্যু হয়, কারোর আবার ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে।অনেকেই ভেবেছিলেন, লকডাউনের জেরে হয়ত সব ধরনের ট্রেন চলাচল পরিষেবাই বন্ধ থাকবে।কিন্তু তা আদৌ হয়নি।এরফলে অনেক মানুষ প্রাণ দিয়েছেন।
রেলের মুখপাত্র ডি জে নারইন জানান, 'এটা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। রেললাইন ধরে যাতে কেউ না হাঁটেন, তারজন্য একাধিকবার সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে।সারা দেশে ৭০ হাজার কিলোমিটার রেলপথ ছড়িয়ে আছে।সারা দিনে দেশজুড়ে ১৭ হাজার ট্রেন চলে।সাধারণ মানুষের সুরক্ষাই আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেদিক থেকে সাধারণ মানুষের মৃত্যু যদি এভাবে হয়, তাহলে তা খুবই কষ্টের ও দুঃখের।প্রত্যেকের বোঝা উচিত, রেললাইন ধরে গন্তব্যে পৌঁছোনোর চেষ্টা ভয়ঙ্কর হতে পারে।'
উল্লেখ্য, গত বছর ২৫ মার্চ থেকে করোনার জেরে দেশজুড়ে লকডাউন শুরু হয়ে যায়।লকডাউন ঘোষণার পর প্রাথমিকভাবে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার জন্য কোনও ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়নি।ফলে অনেক পরিযায়ী শ্রমিকরাই রেললাইন ধরে বা সড়কপথে কয়েক কিলোমিটার পথ হেঁটে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেন।অনেকে পারেন। কিন্তু অনেকেরই মাঝপথে মৃত্যু হয়।মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদে রেললাইনের ওপর পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যুর ঘটনা প্রথম প্রকাশ্যে আসে।পণ্যবাহী ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয় ১৬ জনের। তারপর রেললাইনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা শুকনো রুটির ছবি ছড়িয়ে পড়েছিল। এরপরে কেন্দ্র নড়েচড়ে বসে।এই রকম একাধিক ঘটনা ঘটার পর পরিযায়ী শ্রমিকদের তাঁদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালানো হয়।