অমর্ত্য সেনের মুকুটে জুড়ল আরও এক নয়া পালক। ঐতিহ্যবাহী ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় বিশ্ব শান্তি পুরস্কার পেলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। তবে করোনাভাইরাসের জেরে সশরীরে হাজির ছিলেন না তিনি। আমেরিকার বস্টন থেকে ভার্চুয়ালি সেই পুরস্কার গ্রহণ করেন অমর্ত্যবাবু।
একটি জার্মান সংবাদমাধ্যমের তরফে জানানো হয়েছে, অনুষ্ঠানের সময় বস্টনের ভোর চারটে বেজে গিয়েছিল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা ছিল জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাঙ্ক ওয়াল্টার স্টেইনমেইর। কিন্তু এক দেহরক্ষীর শরীরে করোনার অস্তিত্ব পাওয়ায় তিনি নিভৃতবাসে যান। তবে বিখ্যাত পাউল গির্জার অনুষ্ঠানে তাঁর ভাষণ পড়া হয়।
তাতে জার্মান প্রেসিডেন্ট জানান, শুধু বিশ্বের কাজকর্মকে উপলব্ধি করা নয়, সক্রিয়ভাবে বিশ্বকে পরিবর্তন করতে চেয়ে অমর্ত্যবাবুর কাজ শিক্ষার গণ্ডিকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘এবং এটা পরিবর্তন করতে সফল হয়েছেন অমর্ত্য সেন। এই বিশ্বের অসাম্য এবং অবিচারের বিরুদ্ধে কলম ধরেন তিনি।’
অমর্ত্যবাবুর কাজে তিনি যে অত্যন্ত মুগ্ধ, তাও স্পষ্টভাবেই বুঝিয়ে দেন জার্মান প্রেসিডেন্ট। প্রথম বাঙালি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে ‘বিশ্বের নাগরিক’ হিসেবে অভিহিত করে তিনি জানান, অমর্ত্যবাবুর গবেষণা, কাজ, চিন্তাধারায় বিশ্বব্যাপী যে ন্যায়বিচারের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে, তা অন্য কারোরও ক্ষেত্রে হয়নি।
পুরস্কার পেয়ে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ জানান, তরুণ পড়ুয়াদের সঙ্গে কাজ করতে পারাটা দুর্দান্ত বিষয়। বর্তমান বিশ্বে নয়া নয়া চিন্তাভাবনা এবং রাজনৈতিক ধ্যান-ধারণার জন্য তাঁদের সেরা শিক্ষক হিসেবে বিবেচনা করেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি জানান, বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে যে দৃষ্টিভঙ্গি ছিল, করোনার প্রভাবে সেগুলি নিয়ে নতুন ভাবনাচিন্তা শুরু করতে বাধ্য হয়েছেন মানুষ। তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজেদের জীবন বড় ও বিশ্বব্যাপী প্রেক্ষাপটে দেখা উচিত।’