কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স) ক্ষেত্রেও কি আমেরিকার একাধিপত্যে থাবা বসিয়ে ফেলবে চিন? টিকটকের মূল সংস্থা বাইটডান্স এবং ডিপসিকের নয়া পদক্ষেপের পরে এমনই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। গত সোমবার ডিপসিক-আর১ নামে একটি ওপেন-সোর্স রিজনিং মডেল চালু করেছে চিনা স্টার্ট-আপ ডিপসিক। যা একাধিক মাপকাঠিতে ওপেন এআইয়ের ‘ওয়ান১’ মডেলকে টেক্কা দিচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে। আর তার দু'দিন পরেই নিজেদের ফ্ল্যাগশিপ এআই মডেলের উন্নততর ভার্সন চালু করেছে বাইটডান্স। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, বছরের পর বছর ধরে আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্সের ক্ষেত্রে একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রেখে এসেছে আমেরিকা। সেই আধিপত্যে এবার থাবা বসানোর জন্য কোমর বেঁধে ময়দানে নেমেছে চিন। ক্রমশ কঠিনতর সমস্যা সমাধানের জন্য এআই মডেল তৈরির ক্ষেত্রে দু'দেশের লড়াইটা আগামিদিনে আরও জোরদার হবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
OpenAI-কে 'হারিয়ে' দিল ‘অজানা’ ডিপসিক
বিশেষত সেই লড়াইয়ের ক্ষেত্রে ডিপসিকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। কয়েক মাস আগেও সেই স্টার্ট-আপের বিষয়ে বেশি কেউ জানতেন না। কিন্তু আচমকা সেই স্টার্ট-আপই সিলিকন ভ্যালির আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। ওই সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে, অঙ্ক এবং রিজনিংয়ের একাধিক মাপকাঠিতে মার্কিন সংস্থা 'ওপেন এআই'-কে পিছনে ফেলে দিয়েছে চিনা স্টার্ট-আপ।
প্রথমসারির সংস্থার কপালে ভাঁজ পড়বে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, চিনের অধিকাংশ আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স সংস্থা মূলত অত্যাধুনিক হার্ডওয়্যারের উপরে নির্ভর করে থাকে। সেখানে সফটওয়্যার-নির্ভর বিষয়ের উপরে ভিত্তি করে এগিয়েছে ডিপসিক। আর তার ফলে একাধিক সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়েছে। সঙ্গে উদ্ভাবনী প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অন্যান্য প্রতিযোগী সংস্থার থেকেও বাড়তি সুবিধা পাবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। সবমিলিয়ে আমেরিকার প্রথমসারির সংস্থাগুলির কপালে ভাঁজ পড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
চিনা সংস্থার লোভনীয় অফারও আছে
সবথেকে বড় ব্যাপার হল যে ডিপসিক-আর১ ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড়ও দিয়েছে চিনা স্টার্ট-আপ। প্রতি ১০ লাখ টোকেনের জন্য ২.২ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় মেরেকেটে ১৯০ টাকা) ধার্য করছে। সেখানে একইরকমের সুযোগ-সুবিধার জন্য ৫,২০৫ টাকার মতো খরচ পড়বে। আর বাইটডান্সের তো আরও আগ্রাসীভাবে ময়দানে নেমেছে। যা থেকে উদ্দেশ্যেটা খুব স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। ওই মহলের মতে, আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্সের দুনিয়ায় ‘ঠান্ডা যুদ্ধ’ শুরু হয়ে গেল।
এমনিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স) লড়াইয়ে ২০২২ সালে নভেম্বর বড়সড় পা ফেলেছিল ‘ওপেন এআই’। গত বছরের সেপ্টেম্বরে আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স রিজনিংয়ের 'স্ট্রবেরি' বাজারে নিয়ে আসে স্যাম অল্টম্যানের সংস্থা। গত সপ্তাহে তো আবার 'ওপেন এআই'-র সিইও জানিয়েছেন যে নয়া এআই রিজনিং মডেল 'ও৩ মিনি'-র কাজ শেষের দিকে চলে গিয়েছে। যা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন 'ওপেন এআই'-র সিইও।