রাহুল সিং
যতদিন যাচ্ছে, ততই উত্তপ্ত হচ্ছে ভারত-চিন সীমান্ত। মুখে দুই দেশের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতারা তেমন কিছু না বললেও সীমান্তে আঁটোসাঁটো হচ্ছে প্রস্তুতি। লোকবল বাড়াচ্ছে প্রস্তুতি। লাডাখ সীমান্তে ৫০০০ সৈন্য পাঠিয়েছে চিন। প্রত্যুত্তরে সেনার সংখ্যা বাড়াচ্ছে ভারতও।
লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি)-র চার জায়গায় একেবারে সামনা সামনি ভারত-চিন সেনা। বারবার বৈঠক করেও কিছু সমাধানসূত্র মেলেনি। প্যাঙ্গোঙ্গ লেকের কাছে প্যাট্রোল বাহিনীদের সংঘর্ষের মধ্যে দিয়ে যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল, তা এখন কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই সামরিক কর্তা হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন যে ওই অঞ্চলে ৫০০০ সেনা নিয়ে এসেছে চিন। তবে ফ্ল্যাস পয়েন্টগুলিতে নয়, বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এই সেনাগুলি। এক ভারতীয় সেনা কর্তা জানিয়েছেন যে চিনকে বেশি কসরত করতে হয়নি। কাছেই একটা জায়গায় সামরিক ট্রেনিং চলছিল। সেখান থেকেই সেনাকে ওখানে পাঠিয়ে দিয়েছে শি জিনপিংয়ের দেশ। আরেক সামরিক অফিসার জানিয়েছেন যে ভারত চিনের রণনীতির ওপর নজর রেখেছে ও সেনার সংখ্যায় যাতে সামঞ্জস্য থাকে, সেটি নিশ্চিত করা হচ্ছে।
প্রাক্তন নর্থান আর্মি কম্যান্ডার অবসরপ্রাপ্ত লেফট্যানেন্ট জেনারেল ডি এস হুডা বলেছেন যে যতক্ষণ চিনের সেনাবাহিনী নিজেদের জায়গায় আছে ও ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছে না, একটা কথা বলার পরিস্থিতি আছে। তিনি বলেন যে এলএসিতে অত সেনা মোতায়েন করার জায়গা নেই। তাই ওদের মূলত চিনের সীমান্তের ভেতরে থাকার জন্য রাখা হয়েছে বলে জানান প্রাক্তন সেনাকর্তা।
আরেক প্রাক্তন নর্থান আর্মি কম্যান্ডার লেফট্যানেন্ট জেনারেল বিএস জয়সওয়াল বলেন যে ভারতকে নিজের সামরিক শক্তি দেখাতে হবে ফৌজের সংখ্যা বাড়িয়ে। তাহলেই আলোচনার টেবিলে আনা যাবে চিনকে। শুধু প্যোঙ্গাঙ্গ লেক নয়, গাইওয়ান উপত্যকায় একশোটি তাঁবু খাটিয়ে অস্থায়ী ছাউনি বানিয়েছে চিন। কিছু জায়গায় সীমান্তের লাগোয়া বাঙ্কারও বানাচ্ছে চিন।
গত সপ্তাহেই লাদাখে এসেছিলেন সেনাপ্রধান মুকুন্দ নারভানে। পুরো পরিস্থিতিটি খতিয়ে দেখেন তিনি। একটি সিকিম সীমান্তে ভারত-চিন সংঘর্ষ হয়। অন্যদিকে মার্চ ৫-৬ নাগাদ প্যাঙ্গোঙ্গ লেকের ফিঙ্গার ফোরের কাছে ভারত-চিন সোনার মধ্যে হাতাহাতি হয়। এর পরেই উত্তেজনা ছড়ায় অন্যত্র।
তবে সাধারণত এরকম সমস্যা হয় মূলত স্থানীয় কম্যান্ডারদের অতি উত্সাহে। এবার বিষয়টি একটু জটিল বলেই জানা যাচ্ছে। কূটনৈতিক স্তরেই এর সমাধান খুঁজতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।