ভারতে সফররত তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খাল মুত্তাকি আফগান দূতাবাসে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন গত ১০ অক্টোবর। সেই সংবাদ সম্মেলন ঘিরে বিস্তর বিতর্ক শুরু হয়েছে। কারণ, অভিযোগ করা হচ্ছে, সেই সংবাদ সম্মেলনে নারী সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এই আবহে সাংবাদিক মহল, রাজনৈতিক দলগুলি তোপ দেগেছে মোদী সরকার এবং বিদেশ মন্ত্রককে। এরই মাঝে বিদেশ মন্ত্রক অবশ্য জানায়, সেই বিতর্কিত সাংবাদিক সম্মেলনে ভারতের সরকারের কোনও ভূমিকা ছিল না। আর এবার এই বিতর্কে নিজেদের দায় এড়াতে চাইল তালিবানও। তালিবানের রাজনৈতিক প্রধান সুহেল শাহি দাবি করেছেন, সংবাদ সম্মেলনের সময় তিনি নারীদের বাইরে থাকার কোনও নির্দেশ দেননি। তাঁর বক্তব্য, এই গোটা ঘটনায় তালিবানের কোনও হাত ছিল না।
সুহেল শাহি বলেন, 'আমাদের সম্পর্কে যা বলা হচ্ছে তা মোটেও সত্য নয়। আফগানিস্তানে নারী সাংবাদিকরাও আছেন এবং তারা মিডিয়া প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। কাবুলে মুত্তাকি নিজে নিয়মিত নারী সাংবাদিকদের সাথে দেখা করেন এবং তাদের প্রশ্নের উত্তর দেন। এখানে কোনও বিধিনিষেধ নেই।' উল্লেখ্য, দিল্লিতে আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে নারীদের অংশগ্রহণ না করা নিয়ে বিরোধীরা সরকারকে তোপ দেগেছে।
এদিকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিদেশ মন্ত্রণালয় জানায়, এই সংবাদ সম্মেলনে ভারত জড়িত ছিল না। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, এটি কোনও যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন নয়, আফগান দূতাবাসে আয়োজিত একটি পৃথক সাংবাদিক সম্মেলন। সংবাদ সম্মেলনে মাত্র কয়েকজন পুরুষ সাংবাদিক এবং আফগান দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ২০২১ সালে তালিবান পুনরায় আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফেরার পর এটাই কোনও আফগান শীর্ষস্থানীয় নেতার প্রথম ভারত সফর। এই আবহে গত ১০ অক্টোবর বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেন মুত্তাকি। পরে ভারত ও তালিবান যৌথ বিবৃতিও জারি করেছিল। যদিও ভারত এখনও তালিবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি, তবে ক্রমশ কূটনৈতিক যোগাযোগ ও সংলাপ বাড়াচ্ছে দুই দেশ। এই আবহে কাবুলে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসকে ফের পূর্ণ মর্যাদায় চালু করেছে দিল্লি। এই সবের মাঝেই মুত্তাকির সংবাদসম্মেলন ঘিরে ভারতে বিতর্ক চরমে।