দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষিত হয়েছে। ভোট হবে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি। ফল প্রকাশ হবে ৮ ফেব্রুয়ারি। দিল্লিতে এই বছর ত্রিমুখী লড়াই হতে চলেছে। আর নির্বাচন ঘোষিত হতেই ঝাঁপিয়ে পড়লেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দিল্লির বস্তির একটি জনসভা থেকে অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং তাঁর দল আপকে তীব্র নিশানা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কেজরিওয়ালকে দলের জন্য ‘আপদ’ বলে কটাক্ষ করেন তিনি। অমিত শাহের কটাক্ষ , অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং দলের বিধায়ক মণীশ সিসোদিয়া যেখানেই যান সেখানেই মানুষ মদের বোতল দেখতে পান।
আরও পড়ুন: সরকার চাইছে মাদক ধ্বংস করতে, আর দেশের ৭ শতাংশ মানুষ নেশায় বুঁদ হয়ে রয়েছে: শাহ
এদিন শাহ বলেন, বস্তির বাসিন্দাদের সঙ্গে আপ দ্বিচারিতা করেছে। বাসিন্দারা অতীতে আপকে সমর্থন করেছিল। তারপরেও ঝুপড়ির বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রগুলি ভেঙে দেওয়ার কথা বলছে আপ। শুধু তাই নয়, আপ প্রচার করে বেড়াচ্ছে বিজেপি জিতলে সমস্ত কল্যাণমূলক প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবে। তবে শাহ আশ্বাস দিয়েছেন, ঝুপড়ি যেখানে ছিল সেখানেই থাকবে। শুধু তাই নয়, বস্তিবাসীদের পাকা ঘর বানিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন শাহ। এছাড়াও তাঁর আশ্বাস, দরিদ্রদের জন্য কোনও কল্যাণমূলক প্রকল্প বন্ধ হবে না। তাঁর কটাক্ষ, আসলে কেজরিওয়ালের একগুঁয়ে মনোভাবের কারণে দিল্লিবাসীদের কাছে অনেক পরিষেবা পৌঁছয়নি। তিনি জোর দিয়ে আরও বলেছেন, কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত ৩৩টি রাজ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে।
শাহের অভিযোগ, ‘প্রধানমন্ত্রী মাতৃ বন্দনা যোজনা’র অধীনে দিল্লিতে গর্ভবতী মহিলাদের ৬০০০ টাকা দেওয়া বন্ধ করেছে আপ। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ইউপিএ সরকারও অভিযোগ করেছিল যে বিজেপি MGNREGA প্রকল্প বন্ধ করবে। তবে বিজেপি আসার পর তহবিল বাড়িয়েছে। ঘুগি এলাকায় জনসংযোগ প্রসঙ্গে শাহ বলেন, দিল্লি বিজেপি গত বছরের ২১ জুন শহরে ‘ঝুপড়ি যোগাযোগ অভিযান’ চালু করেছিল। এই প্রচারাভিযানের অধীনে দিল্লির ৭ জন সাংসদ এবং বিজেপির নেতা কর্মীরা ২৬ সপ্তাহ ধরে ২,৫০০টি বস্তি এবং জেজে ক্লাস্টারে জনসংযোগ করেছে। তিনি জানান, সেই সময় বিজেপির নেতা কর্মীরা এলাকাবাসীদের দুর্দশার কথা শুনেছেন এবং সমস্যার একটি তালিকা তৈরি করেছেন। সেই তালিকা বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দেওয়া হয়েছে। ইস্তেহারে এই বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন শাহ।
এছাড়াও, কেজরিওয়ালকে দেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা বলে উল্লেখ করেছেন শাহ।তিনি বলেন, ‘কেজরিওয়ালই হলেন ইতিহাসে একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী যিনি জেলে যাওয়ার পরেও পদত্যাগ করতে অস্বীকার করেছিলেন। তিনি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা পূরণ করেননি। এখন দিল্লির মানুষ ‘মুক্তিদাতা’ হয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি শহরকে দুর্নীতি, নোংরা জল, আবর্জনা থেকে মুক্ত করতে পারেন। শাহের কটাক্ষ, আপ ১০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকার সময়ে শহরের পরিকাঠামো এবং নাগরিক পরিষেবা তলানিতে ঠেকেছে। নোংরা জল সরবরাহ এবং রাস্তার ধারে আবর্জনা পরিষ্কারের বদলে দলটি মদের দামে ছাড় দেওয়া নিয়ে ব্যস্ত। দিল্লির দূষণ নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি শাহ। তিনি বলেন, দিল্লি দেশের মধ্যে সম্পূর্ণ দূষিত হয়ে পড়েছে। ঝুপড়িবাসিকে পানীয়ের জন্য বোতল কিনতে বাধ্য করা হয়।