সরকার এবং প্রশাসন আপ্রাণ চেষ্টা করছে যাতে দেশের কোনও নাগরিকই মাদকের জালে না জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু, এখনও এই কাজে সম্পূর্ণ সাফল্য আসেনি। কারণ, এখনও দেশের প্রায় ৭ শতাংশ মানুষ মাদকের নেশায় আচ্ছন্ন।
শনিবার এই তথ্য সামনে এনেছেন স্বয়ং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর বার্তা, কিছু মানুষ মাদকের নেশায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকার ফলেই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পক্ষে মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই আরও কঠিন হয়ে উঠছে।
শনিবার দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে একটি বিশেষ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। যার বিষয় ছিল - 'মাদক পাচার ও জাতীয় নিরাপত্তা'।
সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে শাহ বলেন, 'ভারতের প্রায় ৭ শতাংশ মানুষ বেআইনিভাবে মাদক ব্যবহার করেন। মাদকের নেশা ঠিক ক্যানসারের মতো। যা একটা দেশের একের পর এক প্রজন্ম ধ্বংস করে দেয়। আমাদের একে পরাস্ত করতেই হবে। এটাই হল সেই সময়, যখন আমাদের এ নিয়ে কাজ করতে হবে, এই লড়াইয়ে সামিল হতে হবে এবং অবশ্যই জিততে হবে। আজ আমরা যদি এই সুযোগ হারিয়ে ফেলি, তাহলে ভবিষ্যতে আর কখনও এই সুযোগ ফিরে আসবে না।'
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এই সভার মঞ্চ থেকেই জানান, ২০২৪ সালে সারা দেশে প্রায় ১৬,৯১৪ কোটি টাকার মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে যত মাদক উদ্ধার করা হয়েছে, এই মূল্য তার মধ্যে সর্বাধিক।
এই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই 'মাদক ধ্বংসকারী এক পক্ষকাল' কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অমিত শাহ। যার অধীনে আগামী ১০ দিনের মধ্য়ে ১ লক্ষ কিলোগ্রাম মাদক নষ্ট করা হবে। যার বর্তমান বাজারদর প্রায় ৮,৬০০ কোটি টাকা।
সরকার যে মাদক প্রতিরোধে বদ্ধপরিকর, আমজনতার কাছে সেই বার্তা পৌঁছে দিতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ২০০৪ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ৩.৬৩ লক্ষ কেজি মাদক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। ২০২৪ সাল পর্যন্ত সেটাই প্রায় সাতগুণ বেড়েছে। অর্থাৎ - ১০ বছরে (২০১৪ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে) উদ্ধার হওয়া মাদকের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে প্রায় ২৪ লক্ষ কিলোগ্রাম!
অন্যদিকে, ২০০৪ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে যে পরিমাণ মাদক নষ্ট করা হয়েছিল, তার বাজারদর ছিল প্রায় ৮,১৫০ কোটি টাকা। ২০১৪ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে সেই পরিমাণও প্রায় সাতগুণ বেড়ে হয়েছে ৫৬,৮৬১ কোটি টাকা।