পূর্বতন কংগ্রেস বা সিপিএমের সরকার যা করতে পারেনি, সেই কাজ করে দেখিয়েছে ত্রিপুরার বিজেপি নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার। প্রায় দুই দশক ধরে ব্রু অভিবাসীদের পুনর্বাসনের কাজ ঝুলে ছিল। সেই অসমাপ্ত কাজ শেষ করেছে বিজেপি সরকার। রবিবার ত্রিপুরার মাটিতে দাঁড়িয়ে জোর গলায় একথা বললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ।
তাঁর অভিযোগ, কংগ্রেস এবং সিপিএমের সরকার বহু বছর ত্রিপুরার শাসন ক্ষমতায় থাকলেও ব্রু অভিবাসীদের সমস্যা মেটানোর কোনও চেষ্টাই করেনি তারা।
এদিন ধলাই জেলার কুলাই আরএফ গ্রামে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে ১৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন অমিত শাহ। যার আর্থিক মূল্য ৬৬৮.৩৯ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে জাতিদাঙ্গার কবল থেকে বাঁচতে মিজোরামের মামিট, কোলাসিব এবং লুংলেই জেলা থেকে ৩২ হাজারেরও বেশি ব্রু অভিবাসী ত্রিপুরায় চলে আসতে বাধ্য হন।
এই ঘটনার ২৩ বছর পর কেন্দ্রীয় সরকার, ত্রিপুরা সরকার এবং মিজোরাম সরকারের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হয় ২০২০ সালে। যার মাধ্যমে ত্রিপুরাতেই ব্রু অভিবাসীদের থাকার পাকাপাকি বন্দোবস্ত করা হয়।
এদিন, সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে শাহ বলেন, প্রায় দুই দশক ধরে ব্রু অভিবাসীরা চরম অমানবিক পরিবেশে থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন। একটি চালের নীচে পরিবারের সকলে থাকতেন। তাঁদের জন্য পানীয় জলের ব্যবস্থা ছিল না, বিদ্যুৎ ছিল না, শিক্ষার প্রসার ছিল না, চাকরি ছিল না, স্বচ্ছতা ছিল না, স্বাস্থ্য পরিষেবা ছিল না।
ব্রু অভিবাসীদের এই সমস্যার কথা তুলে ধরে রাজ্যের পূর্বতন বাম ও কংগ্রেসের সরকারকে তুলোধনা করেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, কমিউনিস্টরা দাবি করে, তারা নাকি গরিবের মাসিহা। অথচ, তারা ৩৫ বছর ধরে এখানে শাসন করেছে। কংগ্রেসও এখানে বহু বছর সরকার চালিয়েছে। কিন্তু, কেউই ব্রু অভিবাসীদের যন্ত্রণা অনুভব করতে পারেনি। একমাত্র বিজেপিই কাজের কাজ করেছে।
অমিত শাহের কথায়, 'যখন পরিবর্তন এল, বিজেপি এখানে সরকার গঠন করল। বিজেপি তখন কেন্দ্রের সরকারেও ছিল। আর এখানে মুখ্যমন্ত্রী হলেন বিপ্লব দেব। ওঁদের (ব্রু অভিবাসীদের) পুনর্বাসনের চুক্তি সম্পন্ন করা হল।'
অমিত শাহের আরও অভিযোগ, কংগ্রেসের আমলে এই রাজ্যে অসংখ্য যোজনা ঘোষণা করা হলেও তা কার্যকর করা হয়নি।
তিনি জানান, বিজেপির সরকার গঠিত হওয়ার পর ব্রু অভিবাসীদের থাকার জন্য ১১টি গ্রাম নির্মাণ করা হয়েছে। ৯০০ কোটি টাকা খরচ করে সেখানে পানীয় জল, বিদ্যুৎ, ইট পাতা রাস্তা, রাস্তায় সৌর আলো প্রভৃতির ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেক পরিবার ৩৫ কিলো করে চাল পাচ্ছে। অঙ্গনওয়াড়ি ও স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়া হয়েছে। সম্প্রতি একটি আধুনিক পরিকাঠামোযুক্ত স্কুলেরও উদ্বোধন করা হয়েছে।