ইরাক, ইরান ও আফগানিস্তান থেকে পড়তে আসা পড়ুয়াদের জন্য একটি বিশেষ নির্দেশিকা জারি করল আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় (এএমইউ) কর্তৃপক্ষ। যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
ওই নির্দেশিকায় উল্লেখিত তিনটি দেশ থেকে পড়তে আসা পড়ুয়াদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ভবিষ্যতে আর কখনও তাঁরা যেন সোশাল মিডিয়ায় ভারতের জাতীয় কোনও ইস্যু এবং যেকোনও ধরনের আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে কোনওরকম পোস্ট না করেন।
পাশাপাশি, তাঁদের এও বলা হয়েছে যে, এবার থেকে শহর ছেড়ে বাইরে কোথাও যেতে গেলে তাঁদের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আগে থেকে অনুমতি নিয়ে রাখতে হবে। পাশাপাশি, প্রশাসনের কাছে তাঁদের নিজেদের গতিবিধি সম্পর্কে সমস্ত তথ্য প্রদান করতে হবে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, এএমইউ-এর ডেপুটি প্রোক্টর প্রফেসর সইদ আলি নওয়াজ জাইদি মঙ্গলবার এই প্রসঙ্গে কিছু কথা বলেন। তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট তিনটি দেশ থেকে আসা পড়ুয়াদের নয়া নির্দেশিকা সম্পর্কে অবহিত করতে তাঁদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে আলোচনা করা হচ্ছে।
জাইদি বলেন, 'সোশাল মিডিয়ার ব্যবহার নিয়ে পড়ুয়ারা অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত ঘটনাগুলির পরিণামও পড়ুয়াদের জন্য ভালো নয়। এই কারণেই, তাঁদের সেই সমস্ত বিষয়ে যুক্ত হওয়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যার সঙ্গে সাধারণ মানুষের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। যদি কেউ এই নির্দেশিকার অবাধ্য হন এবং কোনওভাবে নির্দেশিকা লঙ্ঘন করেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলারক্ষা সংক্রান্ত পদক্ষেপ করা হবে। আগামী দিনে আমরা অন্য়ান্য দেশ থেকে পড়তে আসা পড়ুয়াদের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠকে বসব।'
পড়ুয়াদের একাংশ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে খুব খুশি। তাঁরা এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। অখিল কুশল নামে এক পড়ুয়াকে উদ্ধৃত করে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, 'মাসখানেক আগে বাংলাদেশ থেকে পড়তে তিন পড়ুয়া সোশাল মিডিয়ায় আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন। তারপর এএমইউ-তে হিন্দু পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখান। তারপরই কর্তৃপক্ষ এই পদক্ষেপ করে।'
সূত্রের দাবি, ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দুই বাংলাদেশি পড়ুয়াকে বরখাস্ত করেছে এবং তৃতীয় জনকে একটি সতর্কতামূলক চিঠি লিখে জানিয়ে দিয়েছে, ভবিষ্যতে আর কোনও দিন তিনি এমএমইউ-তে কোনও কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন না।
তথ্য বলছে, এই মুহূর্তে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের ২৬টি দেশ থেকে আসা ১৭৬ জন বিদেশি পড়ুয়া এএমইউ-তে পড়াশোনা করছেন।