প্রদীপ কুমার মৈত্র
এবারের মহারাষ্ট্রের ভোটে অন্যতম বড় ভূমিকা নিয়েছিল আরএসএস। তবে এরপরে নতুন মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা নিয়ে যে ভূমিকা পালন করছে বিজেপি তাতে কার্যত একেবারেই সন্তুষ্ট নন আরএসএস নেতৃত্ব। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আরএসএস নেতার দাবি, যেভাবে দল একাধিক নামকে ভাসিয়ে দিচ্ছে মুখ্য়মন্ত্রী পোস্টের জন্য সেটা একেবারেই পছন্দ নয় আরএসএসের। বিনোদ তাওড়ে, চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে, চন্দ্রকান্ত পাতিল, সম্প্রতি আবার সিভিল এভিয়েশনের রাষ্ট্রমন্ত্রী মুরলীধর মহলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এটাতে একেবারেই সন্তুষ্ট নয় আরএসএস।
আরএসএস বিশ্বাস করে যে তারা জাতিগত কোনও বিষয় নির্বিশেষে কাজ করে। আর একাধিক নেতা যারা আরএসএসের মাধ্যমে উঠে এসেছেন তাদের ভূমিকা নিয়ে এবার প্রশ্ন উঠছে। এদিকে অজিত পাওয়ার এবং একনাথ শিন্ডে(যদি তিনি মন্ত্রিসভায় থাকেন) তাঁরা দুজনেই মারাঠা। এদিকে আরএসএসের প্রশ্ন বিজেপির কিছু নেতা কেন মারাঠা বিষয়কে গুরুত্ব দিচ্ছেন? কেন তাঁরা দেবেন্দ্র ফড়ণবীসের নামটা আনছেন না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে আরএসএস।
এদিকে আরএসএসের দাবি, একাধিক সিনিয়র বিজেপি নেতা যেভাবে একাধিক নামকে ভাসিয়ে দিচ্ছেন সেটা একেবারেই পছন্দ নয় আরএসএসের। তাদের দাবি, একেবারে নির্দিষ্ট রণকৌশল নিয়ে কাজ করা হয়েছে। ফড়ণবীস ছিলেন। আরএসসে ছিল। অতুল লিমায়ে ছিলেন। আর ছিলেন ৩০০০ ফুলটাইম আরএসএস কর্মী। তাঁদের কর্মনিষ্ঠার ফল হল এবারের বিজয়।
এক আরএসএস নেতার মতে, সম্ভবত প্রধানমন্ত্রী সময় দিতে না পারায় এই নাম ঘোষণার ক্ষেত্রে কিছুটা দেরি হচ্ছে। তবে শিবসেনার শিন্ডে গোষ্ঠীর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রেখে দল কাজ করছে। কারণ সংকটের দিনে তারাই বিজেপিকে সহায়তা করেছিল। কয়েকজন নেতা একনাশ শিন্ডে ও দলের মধ্য়ে মন্ত্রীত্বের পদ নিয়ে কোথাও সমস্যা থেকে থাকলে তা মেটানোর চেষ্টা করছেন। সেই সঙ্গেই পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি বিএল সন্তোষ, আরএসএসের যুগ্ম জেনারেল সেক্রেটারি অরুন কুমার যিনি আরএসএস ও বিজেপির মধ্যে সমণ্বয় রক্ষা করতেন তিনি অন্তত তিনজন সিনিয়র লিডারের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। আরএসএসের সদরদফতরে তিনি সবসময় খবর পাঠাচ্ছেন।
আরএসেএসের দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষক দিলীপ দেওধর জানিয়েছেন, ফড়ণবীস, শিন্ডে ও পাওয়ারের কিছু জ্যোতিষ সংক্রান্ত বিশ্বাস রয়েছে। এক জ্যোতিষ ফড়ণবীসকে পরামর্শ দিয়েছেন যেন ১ ডিসেম্বরের আগে তাঁর নাম ঘোষণা করা না হয় এই তারিখের পরেই যেন তিনি শপথ নেন, সেকারণেই কিছুটা দেরি করা হচ্ছে। আপাতত জ্যোতিষীর পরামর্শে ৫ ডিসেম্বরটা শপথগ্রহণের দিন হিসাবে ঠিক করা হচ্ছে।