লক্ষ্য অবিচল ও অটুট সংকল্পের সামনে কোনও বাধাই টিকতে পারে না। এই আপ্তবাক্য আরও একবার প্রমাণ করলেন বছর চব্বিশের অঞ্চল গঙ্গোয়াল। সম্প্রতি বায়ুসেনায় যোগ দিয়ে শৈশব-স্বপ্ন পূর্ণ করলেন চা বিক্রেতার মেয়ে।
কিছু দান আগে বায়ুসেনায় কমিশনড হয়েছেন ছা-পোষা পরিবারের মেয়ে অঞ্চল। তাঁর সাফল্যে গর্বিত বাবা সুরেশ গঙ্গোয়াল জানিয়েছেন, ‘বায়ুসেনায় ওর সুযোগ পাওয়ায় আমরা গোটা পরিবার অত্যন্ত গর্বিত। তবে করোনা সংক্রমণজনিত নিষেধাজ্ঞার কারণে আমরা ওর সঙ্গে ডান্ডিগালে বায়ুসেনা অ্যাকাডেমিতে গিয়ে দেখা করতে পারিনি।’
পিটিআই জানিয়েছে, মধ্য প্রদেশের নীমচ জেলায় বাস স্ট্যান্ডের কাছে চায়ের দোকান রয়েছে সুরেশের। তিনি জানিয়েছেন, কেদারনাথে দুর্যোগের পরে ত্রাণকাজে বায়ুসেনার জওয়ানদের ভূমিকা দেখে উদ্বুদ্ধ হন অঞ্চল। তবে সেই ইচ্ছাপূরণ করা মোটেই সহজ ছিল না নিম্নবিত্ত পরিবারের।
সুরেশ জানিয়েছেন, বরাবরই মেধাবী ছাত্রী অঞ্চল বাস্কেটবল খেলোয়াড় হিসেবেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। কেদারনাথের দুর্যোগে বায়ুসেনা কর্মীদের সাহসিকতায় অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি বইয়ের দোকান থেকে বাহিনীতে যোগ দেওয়ার খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহ করেন এবং সেই সঙ্গে প্রস্তুতিও শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত ছয় বারের চেষ্টায় সাফল্য পান অঞ্চল।
গত ২৫ বছর ধরে চায়ের দোকান চালিয়ে সংসার ঠেলায় অভিজ্ঞ সুরেশ জানিয়েছেন, ‘আমার আর্থিক অবস্থাটা বুঝতে হবে। কখনও ওর স্কুল ও কলেজের ফি জমা দিতে পারিনি। অনেক বার অন্যদের থেকে টাকা ধার নিয়ে সেই সমস্যা দূর করেছি। কখনও আবার শহরের বাইরে আছি, এই অজুহাত দিয়ে ফি জমা দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত সময় চাইতে হয়েছে।’
ইতিমধ্যে অঞ্চল গঙ্গোয়ালের সাফল্য সম্পর্কে নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে প্রচার করেছেন মধ্য প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। সোমবার তিনি লিখেছেন, ‘অঞ্চল, যাঁর বাবা নীমচে চায়ের দোকান চালান, এবার বায়ুসেনার ফাইটার জেট চালাবেন। বেটি অঞ্চল, যে মধ্য প্রদেশকে গর্বিত করেছে, এবার সীমাহীন আকাশে উড়ে দেশের গর্ব ও সম্মান রক্ষা করবে। মেয়েকে অভিনন্দন, আশীর্বাদ ও শ্রেষ্ঠ শুভেচ্ছা জানাই।’